images

ইসলাম

হজযাত্রায় মৃত্যু হলে কেয়ামত পর্যন্ত হজের সওয়াব

ধর্ম ডেস্ক

০৩ জুলাই ২০২২, ০১:৩৮ পিএম

হিজরি বছরের জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ দিনগুলোতে হজ অনুষ্ঠিত হয়। হজ উপলক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু, কিশোর, যবুক, বৃদ্ধ লাখো মুসলিম নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ব মুসলিমের পূণ্যময় এ মহাসম্মিলনে অনেক মানুষ মৃত্যু বরণ করেন।

এবারের হজযাত্রায়ও অনেকে হজ করার আগেই প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। এ সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১১। এদের মধ্যে পুরুষ ৮ জন ও ৩ জন নারী।  আল্লাহ তাআলার এ মেহমানদের জন্য প্রিয়নবী (স.) ঘোষণা করেছেন বড় সুসংবাদ।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হলো, অতঃপর মৃত্যুবরণ করল, কেয়ামত পর্যন্ত তার হজের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি ওমরার উদ্দেশ্যে বের হলো, আর সে অবস্থায় তার মৃত্যু হলো, কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য ওমরার সওয়াব, লেখা হবে।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৬৩৫৭)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আরাফাতে উকুফ অবস্থায় হঠাৎ তার উটনি হতে পড়ে যায়। এতে তাঁর ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবি বলেছেন, তাঁর ঘাড় মটকে দিল। (যাতে সে মারা গেল)। তখন নবী (স.) বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’কাপড়ে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং মস্তক আবৃত করবে না। কেননা, কেয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠবে। (সহিহ বুখারি: ১২৬৫; সহিহ মুসলিম: ২৭৬৩; ইবনে মাজাহ: ৩০৮৪)

উল্লেখ্য, হজে গিয়ে কেউ মারা গেলে তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। আর এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্রে হজের প্রস্ততিকালেই প্রত্যেক হাজিকে সম্মতি দিতে হয়। হজের সফরে মক্কায় যারা মারা যান তাদেরকে সাধারণত কাবা শরিফের সন্নিকটে জান্নাতুল মাওলাতে আর যারা মদিনায় মারা যান তাদেরকে মসজিদে নববি সংলগ্ন জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়। এ কবরস্থানে প্রিয়নবীর সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম শুয়ে আছেন। 

এসব গোরস্থানে তাঁদের সঙ্গে কোনো মুসলিমের দাফন হওয়া হাদিস অনুযায়ী, অনেক সৌভাগ্যের বিষয়। নবীজি (স.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তির জমিনে চিড় ধরবে, সেই ব্যক্তি আমি। তারপর আবু বকর (রা.), তারপর ওমর (রা.), তারপর আহলে বাকি। আমি আহলে বাকির পাশে থাকব। তারা আমার সঙ্গে একত্র হবে। তারপর আমি মক্কাবাসীর জন্য অপেক্ষা করব। তারা মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি জায়গায় এসে আমার সঙ্গে মিলিত হবে। (সুনানে তিরিমজি: ৩৬২৫)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সেসব হজযাত্রীকে নবীজির প্রতিশ্রুত কেয়ামত পর্যন্ত হজের সওয়াব দান করুন। প্রিয়নবীর সঙ্গে মিলিত করুন। জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।