ধর্ম ডেস্ক
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
মহানবী (স.) মদিনায় হিজরতের পর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল মসজিদে নববী নির্মাণ। তিনি আল্লাহর ইঙ্গিতে সেই স্থান বেছে নেন, যেখানে উটনি বসে পড়েছিল।
জায়গাটি ছিল দুই এতিম বালক, সাহল ও সুহাইলের মালিকানায়, যারা নবীজি (স.)-এর মাতৃকূলের আত্মীয়। তারা জমি দান করতে চাইলেও নবীজি (স.) উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করে গ্রহণ করেন। আবু বকর (রা.) ১০ দিনার প্রদান করেন। মসজিদ নির্মাণের আগে স্থানটি থেকে খেজুরগাছ কেটে নেওয়া ও মুশরিকদের কবর স্থানান্তর করা হয়। (সিরাতে মোস্তফা: ১/৪০৯)
মসজিদটি নির্মিত হয় কাঁচা ইট, পাথর, কাদা-মাটি, খেজুরগাছের ডাল ও পাতা দিয়ে। দৈর্ঘ্য ছিল ১০০ হাত এবং প্রস্থ কিছুটা কম। দরজা তিনটি ছিল। নবীজি (স.) নিজে নির্মাণকাজে অংশ নেন এবং ইট ও পাথর বহনকালে দোয়া করতেন- ‘হে আল্লাহ! আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। আপনি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করুন।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম: পৃ. ১৯৩)
মসজিদের পাশে নবীজি (স.) নিজের ও স্ত্রীদের জন্য ছোট কাঁচা ঘর (হুজরা) তৈরি করেন। ছাদটি এতই নিচু ছিল যে দাঁড়িয়ে হাত দিয়েই স্পর্শ করা যেত। এই ঘর নবীজি (স.)-এর উচ্চ বিনয় ও দুনিয়াবিমুখতার প্রতীক। তিনি স্থায়ীভাবে এখানে আবু আইয়ুব আনসারি (রা.)-এর বাড়ি থেকে চলে আসেন। (আস-সিরাতুন নববিয়্যাহ, পৃ. ৩০১)
মসজিদে নববী কেবল নামাজের স্থান ছিল না; এটি ছিল সম্পূর্ণ ইসলামি সমাজের কেন্দ্র। যেমন-
আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী উল্লেখ করেছেন, ‘এই মসজিদ এমন একটি কেন্দ্র, যেখান থেকে নবগঠিত রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গোত্রীয় দ্বন্দ্বে জর্জরিত মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যে বসবাস করত।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম, পৃ. ১৯৪)