ধর্ম ডেস্ক
১৬ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
প্রত্যেক মানুষেরই মনের গভীরে লুকিয়ে থাকে নানা ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা। মুমিনদেরও কল্যাণকর আশাগুলো পূরণের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কীভাবে দোয়া করলে তা কবুল হয়? হাদিসে বর্ণিত একটি বিশেষ পদ্ধতি হলো— ইসমে আজম (আল্লাহর মহান নামসমূহ) পাঠ করে দোয়া করা।
ইসমে আজম বা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নামগুলো নিয়ে আলেমদের বিভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলেন, আল-হাইয়্যু (চিরঞ্জীব), আল-ক্বাইয়ুম (চিরস্থায়ী), জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম (মহিমান্বিত ও সম্মানিত)— এগুলোই ইসমে আজম। কেউ আবার বলেন, প্রায় ৪০টি নাম ইসমে আজমের অন্তর্ভুক্ত। প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার ইমাম সুয়ূতি (রহ.) তার গ্রন্থে এ বিষয়ে ২০টি মতামত উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) বলেছেন, ‘ইসমে আজম হলো 'আল্লাহ' নামটি— তবে তা একাগ্রচিত্তে ও ইখলাসের সঙ্গে উচ্চারণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: যে দোয়া কোরআনের সুরার মতো শেখাতেন নবীজি
১. হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, এক সাহাবি নবীজি (স.)-এর সামনে এই দোয়া পাঠ করেছিলেন- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ
(উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহদাকা লা শারিকা লাকাল মান্নানু বাদিয়াস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জালজালালি ওয়াল ইকরাম ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।)
নবীজি (স.) তখন তাঁকে বলেন, ‘তুমি ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করেছ, যা দ্বারা দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন এবং যা চাওয়া হয়, তা দান করেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৪)
২. অন্য একটি হাদিসে হজরত বুরাইদা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (স.) দুই ব্যক্তিকে এই দোয়া اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ (উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা, আন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদ, আল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।) পাঠ করতে শুনে বলেন- ‘তোমরা ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চেয়েছ, যা দ্বারা চাইলে তিনি দেন এবং দোয়া করলে কবুল করেন।’ (আবু দাউদ: ১৪৯৩)
আরও পড়ুন: ভাগ্য বদলে দেওয়ার মতো কিছু দোয়া
উল্লিখিত আরবি দোয়াগুলো পড়ার পর নিজের প্রয়োজন ও মনের ইচ্ছা আল্লাহর কাছে তুলে ধরুন। এভাবে দোয়া করলে আল্লাহর রহমত ও কবুলিয়তের আশা করা যায়।
আসুন, আমরা সবাই ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়ার এই মহান সুযোগ কাজে লাগাই। আল্লাহ আমাদের সব ভালো ইচ্ছা পূরণ করুন। আমিন।