images

ইসলাম

২০২৫ সালের আশুরার দুই রোজা কবে?

ধর্ম ডেস্ক

০৩ জুলাই ২০২৫, ১২:১৮ পিএম

ইসলামি ইতিহাসে ১০ মহররম তথা আশুরা এক বিশেষ দিন। এই দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, আল্লাহ তাআলা এ দিন নবী মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এ উপলক্ষে মুসা (আ.) রোজা রাখতেন।

রাসুলুল্লাহ (স.) মদিনায় হিজরতের পর ইহুদিদের এ দিন রোজা রাখতে দেখে বলেছিলেন- ‘আমি তোমাদের চেয়ে মুসার (আ.) অধিক নিকটবর্তী।’ এরপর তিনি নিজে রোজা রাখেন এবং সাহাবিদেরও আশুরার রোজা রাখতে নির্দেশ দেন। (সহিহ মুসলিম: ২৫৪৮)

আশুরার রোজা রাসুল (স.) নিয়মিত রাখতেন

উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বলেন- ‘নবীজি (স.) চারটি আমল কখনও পরিত্যাগ করতেন না: আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা এবং ফজরের আগে দুই রাকাত নামাজ।’ (সুনানে নাসায়ি: ২৪১৬)

আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন- ‘আশুরার রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি, এটি বিগত এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ হবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৬১৭)

আরও পড়ুন: আশুরার যে ৩ আমলে রয়েছে অগণিত সওয়াব

আশুরার দুই রোজা রাখা উত্তম

ইহুদিরা আশুরায় এক দিন রোজা রাখতো। রাসুল (স.) মুসলমানদের ইহুদিদের অনুকরণ না করতে বলেন এবং আশুরার আগে অথবা পরে আরও এক দিন রোজা রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন- ‘তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ এবং তাতে ইহুদিদের বিরোধিতা কর—আগে বা পরে এক দিন রোজা রাখ।’ (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৫)

এ কারণেই মুসলিমরা আশুরার রোজা দুই দিন রাখেন—৯ ও ১০ মহররম, অথবা ১০ ও ১১ মহররম।

২০২৫ সালের আশুরার দুই দিনের রোজার তারিখ

বাংলাদেশে ২০২৫ সালে মহররম মাস শুরু হয়েছে ২৭ জুন, শুক্রবার। সেই হিসাবে ১০ মহররম (আশুরা) পড়বে ৬ জুলাই, রোববার। যারা সুন্নাহ অনুযায়ী দুই দিনের রোজা রাখতে চান, তাদের জন্য দুটি বিকল্প রয়েছে, তা হলো-

  • ৫ ও ৬ জুলাই (শনিবার ও রোববার)
  • বা ৬ ও ৭ জুলাই (রোববার ও সোমবার)

উভয় ক্ষেত্রেই একজন মুসলমান আশুরার রোজা এবং রাসুল (স.)-এর নির্দেশ অনুসারে ইহুদিদের ভিন্ন পথে চলার আমল একসাথে পালন করতে পারবেন।

আশুরার রোজা শুধুই ইতিহাস নয়—এটি গুনাহ মোচনের একটি বিরল সুযোগ। রাসুল (স.) নিজে এটি পালন করেছেন এবং সাহাবিদেরও উৎসাহিত করেছেন। যারা এই রোজা রাখতে চান, তারা সময়মতো প্রস্তুতি নিতে পারেন। ২০২৫ সালে নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী, দু’দিন রোজা রাখলে একদিকে সুন্নাহ পালন হবে, অন্যদিকে আল্লাহর বিশেষ রহমতও আশা করা যাবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই মহান ইবাদত সঠিকভাবে আদায় করার তাওফিক দিন। আমিন।