ধর্ম ডেস্ক
২৯ জুন ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
নফল রোজা ইসলামের একটি বিশেষ ইবাদত, যা ফরজ রোজার পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত। রাসুল (স.) নিয়মিত নফল রোজা রাখতেন এবং উম্মতকে এতে উৎসাহিত করেছেন। এই প্রতিবেদনে নফল রোজার প্রকারভেদ, ফজিলত ও পালন পদ্ধতি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার অতিরিক্ত আমলের বেশ গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে রোজা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণের যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা বাকারা: ১৮৪)
নফল রোজা আল্লাহর অনেক প্রিয় আমল। এই আমলের তুলনা হয় না। আবু উমামাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে কোনো আমলের আদেশ করুন। তিনি বললেন, রোজা রাখ, কারণ এর কোনো তুলনাই নেই। পুনরায় আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে কোনো আমলের আদেশ করুন। তিনি পুনরায় ওই কথাই বললেন, তুমি রোজা রাখ, কারণ এর কোনো তুলনাই নেই। (নাসায়ি: ২২২৩; ইবনে খুজাইমাহ: ১৮৯৩; হাকেম: ১৫৩৩; সহি তারগিব: ৯৮৬)
রোজা পালনকারীদের জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজা থাকবে। নবীজি বলেছেন, ‘রাইয়ান নামক জান্নাতের দরজা শুধু রোজাদারদের জন্য; রোজাদার ছাড়া অন্যকেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৯৬)
নফল রোজায় গুনাহ মাফ হয় এবং জাহান্নাম দূরে সরে যায়। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘নফল রোজা গুনাহ মোচন করে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখে।’ (সুনানে নাসায়ি: ২২৪০)
আরও পড়ুন: নফল ইবাদত কোনটার পর কোনটার বেশি সওয়াব?
শাওয়ালের ৬ রোজা: ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল ও শাওয়ালে ৬টি রোজা রাখল, সে যেন সারাবছর রোজা রাখল।’ (সহিহ মুসলিম: ২৮১৪)
আরাফার রোজা (জিলহজ মাসে): ‘আরাফার দিনের রোজা আগামী ও গত বছরের গুনাহ মোচন করে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৮০৩)
আশুরার রোজা: ‘আশুরার রোজা রাখলে আল্লাহ পূর্ববর্তী বছরের গুনাহ ক্ষমা করেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৮০৫)
আরও পড়ুন: নিশ্চিত জান্নাত লাভের ৮ নফল আমল
শেষ কথা, নফল রোজা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সহজ উপায়। এটি আধ্যাত্মিক উন্নতির পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতাও বয়ে আনে। আসুন আমরা রাসুল (স.)-এর সুন্নত অনুসারে নিয়মিত নফল রোজা রাখার চেষ্টা করি। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে...।’ (বুখারি : ৬০৫৮)