ধর্ম ডেস্ক
০৫ জুন ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
পবিত্র হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোকন আরাফার ময়দানে অবস্থান। আজ ইয়াওমে আরাফাহ (জিলহজের ৯ তারিখ) লাখো হজযাত্রী সমবেত হয়েছেন আরাফার ময়দানে। সেখানে হজের খুতবার পর তারা একত্রে আদায় করেছেন জোহর ও আছরের নামাজ। ইসলামি শরিয়তের নির্দিষ্ট বিধান অনুসারে এই দুই নামাজ সংক্ষিপ্তভাবে, অর্থাৎ ২ রাকাত করে কসর হিসেবে আদায় করা হয়।
হজের দিন ৯ জিলহজ আরাফার ময়দানে অবস্থানকারী হাজিদের জন্য রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নাহ অনুসারে জোহর ও আছরের নামাজ একত্রে আদায় করার বিধান রয়েছে। প্রথমে জোহরের আজান দেওয়া হয়, এরপর মসজিদে নামিরায় হজের খুতবা প্রদান করা হয়। এরপর এক আজান ও পৃথক দুটি ইকামতের মাধ্যমে জোহর ও আছরের নামাজ একত্রে জামাতে আদায় করা হয়।
এই নামাজের ইমামতি করেন মসজিদে নামিরার ইমাম। এতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লাখো মুসল্লি, যারা এই দিনটিকে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের দিন হিসেবে পালন করছেন।
আরও পড়ুন: জিলহজের প্রথম ১০ দিনের ফজিলতপূর্ণ ১০ আমল
এই আমলের ভিত্তি পাওয়া যায় রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবন থেকে। তিনি আরাফার দিনে খুতবার পর জোহর ও আছরের নামাজ একত্রে আদায় করেছিলেন। (সহিহ বুখারি: ১৬৬২; মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক: ৪৪২০)
নিয়মটি হলো- জোহরের ওয়াক্ত হলে প্রথমে আজান দেওয়া হয়। তারপর ইকামত দিয়ে ২ রাকাআত জোহর নামাজ আদায় করা হয়। সালাম ফেরানোর পর পুনরায় ইকামত দিয়ে ২ রাকাআত আছরের নামাজ আদায় করা হয়। এর পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থানই মূল ইবাদত।
এই আরাফার দিন থেকেই হজের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। হাজিরা দিনভর আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর স্মরণ, তাওবা, দোয়া ও কান্নাকাটিতে মগ্ন থাকেন। সূর্যাস্তের পর তারা মুজদালিফার দিকে যাত্রা করেন, যেখানে মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্রে আদায় করা হয়।
আরও পড়ুন: আরাফার রোজা সৌদির হিসাবে রাখবেন নাকি বাংলাদেশের?
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, জোহরের ওয়াক্তে জোহর ও আছরের নামাজ একত্রে আদায়ের এই রুখসত (ছাড়) কেবল হাজিদের জন্য নির্ধারিত। কেউ আরাফায় থাকলেও যদি হজ না করে, তাহলে তার জন্য একসঙ্গে দুই নামাজ পড়া জায়েজ নয়। সেক্ষেত্রে তাকে জোহর জোহরের সময় এবং আছর আছরের সময়েই আলাদাভাবে আদায় করতে হবে। অন্যথায় নামাজ আদায় হবে না।
ইমাম সারাখসি, ইমাম কাসানি এবং অন্যান্য ফকিহগণ একমত যে—এই বিশেষ বিধান শুধু হাজিদের জন্য প্রযোজ্য। (আল-মাবসুত, সারাখসি: ৪/১৭; বাদায়েউস সানায়ে: ২/৩৫২; ফতোয়া খানিয়া: ১/২৯৩; আলবাহরুর রায়েক: ৩/১৪৮৯; রদ্দুল মুহতার: ২/৫০৫)