images

ইসলাম

বিপদ-মসিবতে ‘ইন্নালিল্লাহ’ পড়ার ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক

১৭ জুন ২০২২, ০৩:০৯ পিএম

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বাক্যটি শুধু মৃত্যুর খবরে পাঠ করার জন্য নির্দিষ্ট নয়। এটি আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করারও বড় মাধ্যম। তাঁর প্রতি বান্দাসূলভ আচরণের সুন্দর একটি পরিভাষা। বিপদ-মসিবতে পাঠ করার বাক্য। 

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বাক্যের দুই অংশ। প্রথম অংশ হচ্ছে ‘ইন্নালিল্লাহ’ বা ‘আমরা আল্লাহর’। এ কথা বলার মাধ্যমে স্বীকার করে নেওয়া যে, ‘আমরা আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন, সকল সৃষ্টির নিরঙ্কুশ মালিক তিনিই’। আর পরের অংশটি হচ্ছে ‘ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বা ‘আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে’—এ কথাটিতে আছে আখেরাতের ওপর ঈমানের ঘোষণা। এর নিগূঢ় অর্থ হচ্ছে, চিরকাল আমরা এ পৃথিবীতে থাকতে পারব না। একদিন তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবেই।

ইন্নালিল্লাহ পড়ার ফজিলত
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি দিয়ে। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদের। বিপদ আসলে যারা বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তারই দিকে ফিরে যাব)। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রবের কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫-১৫৭)

উল্লেখিত আয়াতে ধৈর্যশীলদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলছেন, তারা বিপদের সম্মুখীন হলে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়ে। সুতরাং এই বাক্য পাঠকারীরা কোরআন অনুযায়ী ধৈর্যশীল মুমিন এবং মহান প্রভুর প্রতি আস্থাশীল। এই বাক্য পাঠে রয়েছে বিপুল সওয়াব। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমাদের কারো ওপর কোনো বিপদ এলে অবশ্যই সে যেন ‘ইন্না লিল্লাহ...’ বলে। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহ তাআলার এবং আমাদের অবশ্যই তাঁর দিকে ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি আমার বিপদের প্রতিদান চাই। অতএব তুমি আমাকে এর প্রতিদান দাও এবং এর বিনিময়ে ভালো কিছু দান করো।’ (তিরমিজি: ৩৫১১)

এভাবে বিপদে ধৈর্যশীল বান্দা হিসেবে ইন্নালিল্লাহ.. পাঠ করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। তাঁর কাছে এর উত্তম প্রতিদান পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—

মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সব কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শোকর-গুজার করে আর অসচ্ছলতা বা দুঃখ-মসিবতে পতিত হলে ধৈর্যধারণ করে, প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম: ৭৩৯০)

তাছাড়া কারো মৃত্যুর খবর শুনে ইন্নালিল্লাহ পড়ার মাধ্যমে মুমিন নিজেকে মনে করিয়ে দেয় যে, এভাবে একদিন আমাকেও চলে যেতে হবে। এটি একইসঙ্গে নিজের জন্য অনেক বড় একটি উপদেশ। তাই আমাদের উচিত, ছোট-বড় বিপদে বিচলিত না হয়ে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলা। 

এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাদের উত্তম প্রতিদান দেবেন এবং হেদায়েতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিপদে মসিবতে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করার এবং ধৈর্যশীল মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।