images

ইসলাম

ইসলামে স্বামীকে ‘ভাই’ ডাকার বিধান কী?

ধর্ম ডেস্ক

১৪ জুন ২০২২, ০৯:১৮ এএম

রসিকতা করে হোক বা অভ্যাসগতভাবে কিংবা ভালোবাসা বা অভিমান থেকে হোক স্বামীকে ‘ভাই’ সম্বোধন করা কিংবা স্ত্রীকে ‘বোন’ ডাকতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

স্বামীকে ভাই অথবা স্ত্রীকে বোন ডাকার বিধান

স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকা মাকরুহ। কেননা হাদিসে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে, ‘এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল, হে আমার বোন। রাসুল (স.) তা শুনে জিজ্ঞেস করলেন, “সে কি তোমার বোন?” তিনি তা অপছন্দ করেন এবং তাকে এভাবে ডাকতে নিষেধ করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২২০৪)

একইভাবে স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করাও অনুচিত বা অপছন্দনীয় বিষয়। তবে কেউ ভাই বলে ডাকলে এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না। (ফাতহুল কাদির: ৪/৯১; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৫০৭; রদ্দুল মুখতার: ৩/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮)

তবে, স্ত্রীকে বোন ডাকার ক্ষেত্রে নিয়ত যদি এটাই হয় যে, আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম, তুমিও তেমন; তাহলে তা ‘জিহার’-এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় স্ত্রী-স্বামীর মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে না, যতক্ষণ না স্বামী ‘কাফফারা’ আদায় করবে। আর জিহারের কাফফারা হলো ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোজা রাখা বা ৬০ জন অসহায় ব্যক্তিকে খাওয়ানো। (সুরা মুজাদালাহ: ৩)

তাই এ ধরনের অহেতুক ঝামেলা এড়াতে স্বামীকে ভাই কিংবা স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।

স্বামীর নাম ধরে ডাকা

স্বামীর নাম ধরে ডাকা বিষয়টি নির্ভর করে দেশীয় সংস্কৃতি ও রেওয়াজের ওপর। অর্থাৎ স্বামী যদি এতে মনে কষ্ট না পায় বা নিজের সম্মানহানী মনে না করে— তাহলে নাম ধরে ডাকলে কোনো সমস্যা নেই। হাদিসে এসেছে, ‘যখন আল্লাহর রাসুল ইব্রাহিম (আ.) তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশুপুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডাকলেন এভাবে, ‘হে ইবরাহিম, তুমি আমাদের এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ?’ (সহিহ বুখারি: ৩৩৬৫)

বাংলাদেশে সাধারণত স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক ও বেয়াদবি মনে করা হয়, তাই এতদঞ্চলে স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে ফুকাহায়ে কেরাম মাকুরুহে তানজিহি বা শরিয়তে অপছন্দ বিষয় হিসেবে সাব্যস্ত করেন। (রদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার: ০৬/৪১৮)

তবে, কোনো প্রয়োজনে স্বামীর নাম মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা যাবে না— ব্যাপারটা এমন নয়। বরং প্রয়োজনে যেকোনো সময় স্বামীর নাম উচ্চারণ করা যাবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শরিয়তের নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দান করুন এবং যথাযথ মেনে চলার তাওফিক দান করুন।