images

ইসলাম

আজানের পর দোয়া ও দরুদ পড়ার ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক

০৩ জুন ২০২২, ০৩:১১ পিএম

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান শোনার পর দোয়া এবং রাসুলুল্লাহ (স.)-এর ওপর সালাত পাঠ করার অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো। 

আজানের পর দরুদ পাঠ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তোমরা মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তখন সে যেরূপ বলে, তদ্রূপ বলবে। এরপর আমার ওপর সালাত পাঠ করবে; করণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার সালাত পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ১০ বার সালাত (রহমত) প্রদান করবেন। এরপর আমার জন্য অসিলা চাইবে, কারণ অসিলা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান। আল্লাহর একজন মাত্র বান্দাই এই মর্যাদা লাভ করবেন এবং আমি আশা করি আমিই হব সেই বান্দা। যে ব্যক্তি আমার জন্য অসিলা প্রার্থনা করবে, তাঁর জন্য শাফায়াত পাওনা হয়ে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ১/২৮৮, হাদিস নং: ৩৮৪)

অসিলা অর্থ নৈকট্য। জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর যা আল্লাহর আরশের সবচেয়ে নিকটবর্তী, তাকে অসিলা বলা হয়। এ স্থানটি আল্লাহর একজন বান্দার জন্য নির্ধারিত, তিনি হলেন মুহাম্মদ (স.)।

আজানের (অসিলার) দোয়া
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-জিহিদ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-য়িমাতি, আ-তি মুহাম্মাদান আল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা, ওয়াব‘আসহু মাকা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়াআদতাহ’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই প্রভু! মুহাম্মদ (স.)-কে অসিলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফজিলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন।’ (বুখারি: ১/২৫২,নং ৬১৪)

হজরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মুয়াজ্জিনের আজান শুনে যে ব্যক্তি উপরের বাক্যগুলো বলবে, তার জন্য কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত পাওনা হয়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি:১/২২২, নং: ৫৮৯)

উল্লেখ্য, আজানের দোয়ার মধ্য থেকে ‘ওয়াদদারাজাতার রাফীয়াহ’ এবং ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মীআ-দ’ দুটি বাক্যাংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ ‘ওয়াদদারাজাতার রাফীয়াহ এবং ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মীআ-দ’ দুটি সহিহ সনদে বর্ণিত নয়। (বায়হাকি আস-সুনানুল কুবরা: ১/৪১০, ৬০৩/৬০৪)

‘ওয়াদ-দারাজাতার রাফীয়াহ’ বাক্যকে একেবারেই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলেছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার আসকালানি, সাখাবি, যারকানি, আলি কারি প্রমুখ। তাঁদের মতে, ‘মাসনুন দোয়ার মধ্যে ভিত্তিহীন বাক্য বৃদ্ধি করা সুন্নতবিরোধী ও অন্যায়।’ (তালখিসুল হাবির: ১/২১১; আল মাকাসিদ: পৃ-২২২-২২৩; মুখতাসারুল মাকাসিদ: পৃ-১০৭; আল মাসনূ: পৃ-৭০-৭১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পাঁচ ওয়াক্ত আজানের সময় মুয়াজ্জিনের সঙ্গে আজানের বাক্যগুলো পুনরুক্তি করার এবং দরুদ ও দোয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।