ঢাকা মেইল ডেস্ক
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম
বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে একের পর এক অপপ্রচার চলছে। দেশটির বেশির ভাগ গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় এবার ভারতীয় মিডিয়া দেশের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ৮৯তম মাহফিল প্রসঙ্গেও মিথ্যাচার করেছে।
এ ব্যাপারে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) গওহরডাঙ্গা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম ও ছদর ছাহেব রহ.-এর পৌত্র মুফতি উসামা আমিন একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমে।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন- বিগত ২৭, ২৮ ও ২৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ৮৯তম মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্যবাহী এই মাহফিলে লক্ষ লক্ষ তাওহিদি জনতার আগমন ঘটে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই মাহফিলে আসার একটি ঐতিহ্য রয়েছে। এতদাঞ্চলের মুসলিম জনসাধারণ এখান থেকে আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণা ও সারা বছরের দ্বীনি খোরাক গ্রহণ করে থাকেন। মুসলিম নারীদের মাহফিলে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে তাদের যাতায়াতের ভিন্ন রাস্তা ও বয়ান শোনার জন্য ভিন্ন বসার স্থানের ব্যবস্থা করে থাকে মাহফিল কর্তৃপক্ষ।
এই মাহফিলকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত পরামর্শে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত হলো পুরুষ প্রাঙ্গণের অস্থায়ী দোকানপাটে শুধু মাহফিলের তিন দিনের জন্য মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে, তাদের প্রবেশ নিষেধ থাকে। এই নিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে মাহফিলের স্বেচ্ছাসেবকরা অস্থায়ী দোকানপাটে ঘুরে ঘুরে মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। যার একটি খণ্ডিত ভিডিও চিত্র দিয়ে ভারতীয় কিছু নিউজ চ্যানেল ও পেশাদার কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের ব্যক্তি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে অপপ্রচার চালায় যে, মৌলবাদীরা বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে মহিলা প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার ফতোয়া জারি করেছে।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, অথচ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এটা কোনো বাজার নয় বরং অস্থায়ী কিছু দোকানপাট। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্যমান আমাদের ভিডিও চিত্রে স্পষ্টভাবে মাইকে বলা হচ্ছে, এই নিয়ম শুধু তিন দিনের জন্য। যা এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃশ্যমান। আমাদের ভিডিওটি এবং তাদের অপপ্রচারের অংশটুকু যদি কেউ মিলিয়ে দেখেন তাহলে যে কারোর কাছে বিষয়টি নিন্দনীয় ও হাস্যকর মনে হবে।
মুফতি উসামা আমীন বলেন, আমরা এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি এই অপপ্রচার হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা উসকে দেওয়ার জন্য একটি পাঁয়তারা এবং ভারত বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিনষ্ট করার অপকৌশল। আমাদের সামনে স্পষ্ট যে, তাদের এই মিথ্যা অপপ্রচার আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অসৎ পরিকল্পনার অংশ ছাড়া আর কিছুই না।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে প্রতিবেশীদের প্রতি আরও দায়িত্ব-সচেতন হতে হবে। সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে সকল আচার-আচরণে সৌহার্দ্যরে পরিচয় দিতে হবে। সভ্যতা শুধু মুখে নয়, আচরণেও প্রকাশ করতে হবে।
দায়িত্বশীল প্লাটফর্মগুলোর অপেশাদার কার্যকলাপ, কথায় বিদ্বেষী মনোভাব, মিথ্যাচার, তাচ্ছিল্যমূলক ভাবভঙ্গি বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে ভারতবিদ্বেষী করে তোলার পেছনে দায়ী করা যেতে পারে। মিথ্যাচার, কুটকৌশল, অসভ্যতা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ইসলামের দৃষ্টিতে কঠিন অপরাধ বলে গণ্য হয়। জানামতে এগুলো অন্য কোনো ধর্মও সমর্থন করে না।
জেবি