ধর্ম ডেস্ক
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
ফজর ও আছর নামাজের পরই সাধারণত ইমাম সাহেব মুসল্লিদের দিকে মুখ করে বসেন। তারপর কিছুক্ষণ দোয়া-দরুদ, ইস্তেগফারশেষে দোয়া করেন। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, ইমাম সাহেব এই নামাজগুলো শেষ হওয়ার পর কেবলার দিক থেকে মুসল্লিদের দিকে কেন ঘুরে বসেন? ইসলামে কি এর কোনো ভিত্তি আছে?
এই প্রশ্নের জবাব হলো—প্রথমত, দোয়া করার জন্য কেবলামুখী হওয়া শর্ত নয়। যেসব ফরজ নামাজের পর সুন্নত নেই, যেমন—ফজর ও আছর নামাজ, এসব নামাজশেষে ইমাম সাহেবের জন্য ডানে-বাঁয়ে মুক্তাদিদের সামনে নিয়ে বসা সুন্নত। তবে তা জরুরি বা ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৬০, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৫/৯৩)
আরও পড়ুন: দুজনের জামাতে মুক্তাদির দাঁড়ানোর সঠিক নিয়ম
হাদিস অনুযায়ী, কখনও মুক্তাদির সরাসরি সামনে, আবার কখনও কিছুটা ডান দিকে বা বামদিকে ঘুরে বসতেন নবীজি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যেন তার পক্ষ থেকে শয়তানের জন্য কোনো অংশ নির্ধারণ না করে। অর্থাৎ সে যেন এরূপ মনে না করে যে নামাজশেষে ডান দিকে ছাড়া অন্যকোনো দিকে মুখ ফেরানো যাবে না। কেননা আমি বেশির ভাগ সময় রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বাঁ দিকে মুখ ফেরাতে দেখেছি।’ (মুসলিম: ১৫২৩)
ফকিহগণ বলেছেন- ইমামের বরাবর সামনে কোনো মাসবুক থাকলে তিনি ডান বা বাঁ দিকে ফিরে বসবেন। অন্যাথা পুরোপুরি মুসল্লিদের দিকে ফিরে বসবেন। (আলমুহিতুল বুরহানি: ২/১৩১; বাদায়েউস সানায়ে: ১/৩৯৩; শরহুল মুনয়া পৃ. ৩৪১; ফাতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৭৭; রদ্দুল মুহতার: ১/৫৩৩)
আরও পড়ুন: মুকিম ইমামের পেছনে মুসাফির মাসবুক হলে করণীয়
আসলে আল্লাহর রাসুল (স.) এভাবে মুখ ফিরিয়ে মহান আল্লাহর বিভিন্ন বাণী ও নির্দেশনা শোনাতেন, কখনো কখনো তাদের বিভিন্ন সমস্যা বা স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাইতেন। (বুখারি: ৮৪৬; মুসলিম: ৫৮৩১)
অতএব, নামাজের পর কেবলা থেকে ঘুরে মুসল্লিদের দিকে মুখ করে বসা দোষের কিছু নয়; আদবের পরিপন্থীও নয়। আবার এভাবে বসা ওয়াজিবও নয়, সুন্নত হিসেবে কেউ বসতে চাইলে বসতে পারেন। আল্লাহ আমাদেরকে বিষয়টি শরিয়তের নির্দেশনামতো সহজভাবে নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।