images

ইসলাম

জুমার নামাজে হেঁটে যাওয়ার সওয়াব

ধর্ম ডেস্ক

২০ মে ২০২২, ১১:০৫ এএম

জুমাবার মুমিনের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। সপ্তাহের বাকি ছয় দিনের তুলনায় জুমাবার অধিক মর্যাদাসম্পন্ন হওয়ায় দিনটির আমলগুলোও অনেক ফজিলতপূর্ণ। জুমার দিনে অধিক ফজিলতপূর্ণ একটি আমল হচ্ছে পায়ে হেঁটে জুমার নামাজে যাওয়া।

এতে বিপুল সওয়াবের কথা এসেছে হাদিসে। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল (ফরজ বা সাধারণ গোসল), তাড়াতাড়ি মসজিদে গেল বা যাওয়ার চেষ্টা করল, যাওয়ার পথে কোনো কিছুতে আরোহণ না করে হেঁটে গেল, ইমামের কাছে ঘেঁষে বসল, কোনোপ্রকার অহেতুক কথাবার্তা না বলে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনল এবং নামাজ আদায় করল, তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে এক বছর রোজা ও নামাজের সওয়াব দেওয়া হবে।’(তিরমিজি: ৪৫৬)

উল্লেখিত হাদিস অনুযায়ী, জুমাবারের সহজ পাঁচটি কাজে রয়েছে পূর্ণ এক বছর নফল রোজা ও (তাহাজ্জুদ) নামাজের সওয়াব। এই সুযোগ অন্তত মুমিন বান্দাদের হাতছাড়া করার কথা নয়। গোসল একটু আগেভাগে করতে হবে আর ইমামের পাশে বসে নীরবে খুতবা শোনা ও নামাজ পড়ার জন্য দ্রুত রওনা দিতে হবে— শুধু এটুকুই। হয়ত পায়ে হেঁটে যাওয়াটাই একটু কঠিন। অফুরন্ত সওয়াবের তুলনায় সেটি কিন্তু খুবই সহজসাধ্য একটি আমল। সুতরাং মুমিন বান্দাদের এ বিষয়ে সচেষ্ট হওয়া উচিত।

তবে, যেকোনো কারণে হেঁটে যাওয়া কষ্টসাধ্য হলে বাহনে চড়ে যাওয়াতে কোনো বাধা নেই। কারণ, ‘আল্লাহ কারো ওপর সাধ্যের বেশি বোঝা চাপিয়ে দেননি।’ (সুরা বাকারা: ২৮৬)

হেঁটে জুমায় আসার গুরুত্ব বোঝাতে এবং সবাই যেন বিপুল সওয়াবের অধিকারী হতে পারে, সেজন্য খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) তাঁর গভর্নরদের কাছে লিখে জানান যে, কেউ যেন আরোহিত হয়ে জুমায় না আসেন। (ইবনে সায়াদের বরাতে ‘ফাতহুল বারি লিল হাফিজ ইবনে রাজাব আল-হাম্বলি)

সাহাবায়ে কেরাম জুমায় দ্রুত উপস্থিত হওয়ার জন্য নিজেদের কাজ-কর্ম আগেভাগে সেরে নিতেন। মসজিদে ও জুমায় তাঁদের হেঁটে যাওয়া নিয়েও হাদিস রয়েছে। এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর প্রিয় সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.) মসজিদে হেঁটে আসতেন। তবে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি কখনো হেঁটে যেতেন, কখনো বাহনে আরোহণ করতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা)।

সুতরাং, মুমিন মুসলমানের উচিত নামাজের জন্য মসজিদে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করা। এতে সুন্নত আদায় হবে, পাশাপাশি বিপুল সওয়াবও লাভ হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।