images

ইসলাম

মুমিনের গুনাহ লিখতে ফেরেশতার গড়িমসি

ধর্ম ডেস্ক

১৯ জুন ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম

আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তিনি বান্দার গুনাহ ক্ষমা করতে, বান্দাকে দয়া করতে ভালোবাসেন। আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে প্রিয়, যে গুনাহ করার পর দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চায়। মুসলিম বান্দা পাপ করলে ফেরেশতারা তা লিখতে গড়িমসি করেন, গুনাহকারী ব্যক্তি ক্ষমা চাইতে পারে সেজন্য অপেক্ষা করেন।

তাই গুনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। যারা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চান, তাদের আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি জুলুম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু পাবে।’ (সুরা নিসা: ১১০)

আরও পড়ুন: বান্দার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা কেমন?

গুনাহ লিখতে ফেরেশতাদের দেরি করার কারণ
মুমিন ব্যক্তি পাপ করার পর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারে। এ জন্য ফেরেশতারা পাপ কাজ সংঘটিত হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ যদি তার কৃত পাপের জন্য লজ্জিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তবে ফেরেশতারা ওই পাপ তার আমলনামায় লেখেন না, বরং ছেড়ে দেন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন-  إِنَّ صَاحِبَ الشِّمَالِ لِيَرْفَعُ الْقَلَمَ سِتَّ سَاعَاتٍ عَنِ الْعَبْدِ الْمُسْلِمِ الْمُخْطِئِ أَوِ الْمُسِيءِ، فَإِنْ نَدِمَ وَاسْتَغْفَرَ اللهَ مِنْهَا أَلْقَاهَا، وَإِلا كُتِبَتْ وَاحِدَة ‘নিশ্চয় বামের ফেরেশতা পাপী বা অপরাধী মুসলিমের ওপর থেকে ছয় ঘণ্টা কলম তুলে রাখেন। অতঃপর সে যদি পাপে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়, তাহলে তা উপেক্ষা করেন। নচেৎ একটি পাপ লেখা হয়।’ (তাবারানি কাবির: ৭৬৬৭, বায়হাকি শুআবুল ঈমান: ৭০৫১, সহিহুল জামে: ২০৯৭, সি. সহিহাহ: ১২০৯)

আরও পড়ুন: বান্দা যেভাবে চাইলে আল্লাহ খুশি হন

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, পাপ করার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কেননা পাপ করার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চাওয়া মুমিন ব্যক্তির অন্যতম গুণ। যারা মহান আল্লাহকে সত্যিকার অর্থে ভয় করে, তারা যদি কোনো কারণে অন্যায় বা পাপের কাজ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নেয়। ক্ষমা প্রার্থনায় তারা দেরি করেন না। পবিত্র কোরআনে বিষয়টি এভাবে তুলে ধরা হয়েছে— ‘আর যারা কোনো অশ্লীল কাজ করলে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে; অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে? আর তারা যে (অপরাধ) করেছে, জেনেশুনে তার ওপর অটল থাকে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৩৫)

মহানবী (স.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও একই মজলিশে ১০০ বার পড়তেন- رَبِّ اغْفِرْلِىْ وَتُبْ عَلَىَّ انَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ উচ্চারণ: ‘রাব্বিগফিরলি ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আংতাত তাওয়্যাবুর রাহিম।’ অর্থ: ‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করো। আমার তাওবা কবুল করো। নিশ্চয় তুমি অতিশয় তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (মেশকাত: ২৩৫২; আবু দাউদ: ১৫১৬, তিরমিজি: ৩৪৩৪, ইবনে মাজাহ: ৩৮১৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গুনাহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা প্রার্থনা করে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।