ধর্ম ডেস্ক
১৭ মে ২০২২, ০১:১৬ পিএম
কোরবানি হলো ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন- ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন’ (সুরা কাউসার: ২)।
কোরবানির গোশত নিজে খাওয়া, হাদিয়া দেওয়া এবং সদকা করা যায়। আল্লাহর বাণী ‘অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং দুঃস্থ অভাবীকে আহার করাও।’ (সুরা হজ: ২৮)
এখন প্রশ্ন হলো কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করা যাবে কি? এর উত্তরে ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ আছে, কোরবানির গোশত তিন দিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েজ। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৪, মুসলিম: ২/১৫৯, মুয়াত্তা মালেক: ১/৩১৮)।
কেননা, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) কোরবানির মাংস জমা রাখতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং দান-খয়রাত করো।’(বুখারি: ৫৫৬৯; মুসলিম: ১৯৭২; নাসায়ি: ৪৪২৬; মুআত্তা মালিক: ২১৩৫)
ইসলামের প্রথম যুগে তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অনুমতি ছিল না। পরবর্তীতে সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, ‘দরিদ্র আগমনকারীদের কথা বিবেচনা করে আমি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা নিজে খাও, অন্যকে খাওয়াও; সংরক্ষণও করতে পারো।’ (সহিহ মুসলিম: ১৯৭১)
প্রখ্যাত ফকিহ ইবনু আবদিল বার (রহ.) লিখেছেন, সম্মানিত আলিমগণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে, তিন দিনের পরেও কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অবকাশ রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা রহিত। (আত-তামহিদ: ৩/২১৬)
কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৪, আলমগিরি: ৫/৩০০)
উল্লেখ্য, শরিকে বা অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে কোরবানি করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে; অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নয়। (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৭, কাজিখান: ৩/৩৫১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানির গোশত বিতরণসহ প্রত্যেক আমল সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।