images

ইসলাম

কোরবানির পশু ওজন করে বেচাকেনা কি জায়েজ?

ধর্ম ডেস্ক

০৪ জুন ২০২৪, ০২:০০ পিএম

ইসলামে ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হওয়ার কিছু মূলনীতি রয়েছে। যেমন- ক্রেতা-বিক্রেতা ও পণ্যের অস্তিত্ব থাকা, উভয়ের সম্মতিতে প্রস্তাব-গ্রহণ সম্পন্ন হওয়া, প্রতারণার আশ্রয় না নেওয়া ইত্যাদি। নতুন আরও কিছু মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন আলেমরা। কিন্তু কোথাও কেউ ওজনে পশু বিক্রি করাকে নাজায়েজ বলেননি।

যদিও একসময় গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী ইত্যাদি পশু-পাখি ওজন করে বেচাকেনার প্রথা ছিল না। আমাদের প্রিয়নবী (স.)-এর যুগেও এই নিয়ম ছিল না। বরং ক্রেতাগণ হাটে গিয়ে যেটা যার যার পছন্দমতো বিক্রেতার সঙ্গে দর-দাম করে ক্রয় করে নিতেন।

আরও পড়ুন: ২-৩ জন গরিব মিলে কোরবানির এক ভাগ নিতে পারবে?

কিন্তু বর্তমানে অনুমান করার জন্য ওজন করে দেখার আগ্রহ তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। এ প্রসঙ্গে ফুকাহায়ে কেরামদের বক্তব্য হলো- যদি পছন্দের গরু বা অন্য পশু আলোচনাসাপেক্ষে মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিতে উভয়ে সম্মত হয়ে ওজন করে বেচা-কেনার চুক্তি সম্পন্ন করে, ইসলামি শরিয়তের আলোকে এই বেচাকেনা বৈধ বলে বিবেচিত হবে।

আর যখন এই বেচা-কেনা জায়েজ বা বৈধ, তখন এ পদ্ধতিতে ক্রয় করা পশু কোরবানিও জায়েজ। (সূত্র: ফতোয়ায়ে উসমানি: খণ্ড-৩, পৃ-৯৯ এর টিকা দ্রষ্টব্য, আহসানুল ফতোয়া: খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৯৭) 

এখানে উল্লেখ্য, যেহেতু ওজন করার উদ্দেশ্য মূল্য নির্দিষ্ট করা নয়, বরং মূল্য পরিমাণ অনুমান করাই উদ্দেশ্য, তাই এভাবে ওজন করে গরু ছাগল ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয় করাতে নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে, ওজনের মূল্য হিসেবে যেমন গরুটি একশত কেজি, সুতরাং একশত কেজি গোস্তের মূল্য প্রদান করে গরুটি ক্রয় করা হলো—এভাবে বেচাকেনা অবশ্যই নাজায়েজ। (আহসানুল ফতোয়া: ৬/৪৯৭, ইজাহুল মাসায়েল: ১৫৮, ফতোয়া কাসিমিয়া: ১৯/৩৫৩, ফাতাওয়া উসমানি: ৩/৯৯)

আসলে কোরবানির পশু ওজনের মাধ্যমে অনুমান করলে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে ধোঁকাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এই পদ্ধতিতে চুক্তির মজলিসেই যখন সঠিক পরিমাপ বের করা হয়, তাই পুরো মূল্য উভয়পক্ষের জানা হয়ে যায়। ফলে কোনোরূপ ঝগড়া সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বাকি থাকে না। তাই এই পদ্ধতিকে উত্তম বলেছেন কেউ কেউ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর অজানা ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যথানিয়মে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।