ধর্ম ডেস্ক
০৩ জুন ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
কোরবানির শিক্ষা হলো- আল্লাহর ভালোবাসায় নিজের সব চাহিদা ত্যাগ করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ বিশ্বজাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত।’ (সুরা আনআম: ১৬২)
কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মূল্য নিজে গ্রহণ করা জায়েজ নেই এবং কাজের বিনিময় হিসেবেও এই অর্থ দেওয়া যাবে না। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (স.) আমাকে তার কোরবানির পশু জবাই করতে, পশুর গোশত, চামড়া ও নাড়িভুঁড়ি সদকা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর এগুলোর কোনো কিছু কসাইকে দিতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ১৭১৭; মুসলিম: ১৩১৭)
আরও পড়ুন: যেসব কারণে একাকী কোরবানি করা উত্তম
তবে, সেই চামড়া দিয়ে নিজে উপকৃত হওয়া জায়েজ। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরবানির পশুর চামড়া দ্বারা উপকৃত হও; তবে বিক্রি করে দিও না।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ খণ্ড: ৪ পৃ-২৯)
ফতোয়া হলো- মূল্য সদকা করার নিয়তেই কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা যাবে। এক্ষেত্রে নিজের খরচের নিয়ত করা নাজায়েজ ও গুনাহ। নিয়ত যা-ই হোক, বিক্রি করে দিলে পুরো অর্থই সদকা করে দেওয়া জরুরি। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০১; কাজিখান: ৩/৩৫৪)
আরও পড়ুন: যৌথ পরিবারে কোরবানি, সচরাচর ভুল ও সঠিক নিয়ম
কোরবানির চামড়ার অর্থ পাওয়ার হকদার হলো জাকাত ও ফিতরার উপযুক্ত ব্যক্তিরা। এক্ষেত্রে দরিদ্র তালিবে ইলমকেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া যাবে। ইলমে দ্বীনের দরিদ্র শিক্ষার্থীকে জাকাত, ফিতরা ও কোরবানির চামড়ার মূল্য প্রদানে বেশি সওয়াব আছে। কেননা কোরআনে বর্ণিত জাকাত-দান-সদকার একটি খাত হলো—ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদরত মুজাহিদ, হজের সফরে থাকা দরিদ্র ও ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দরিদ্ররা এই খাতের অন্তর্ভুক্ত। (দুররুল মুখতার: ৩৪৩, হেদায়া: ১/১৮৫, রুহুল মাআনি: ৬/৩১৩)
মূলত কোরবানির চামড়ার হুকুম গোশতের মতোই। গোশতের মতো এটিও কোরবানিদাতা নিজে ব্যবহার করতে পারবে। আবার চাইলে কাউকে তা হাদিয়াও দিতে পারবে। গোশতের হুকুমের মতো এটিও বিক্রি করা যায় না। তবে যদি কেউ নিজ কোরবানির চামড়া বিক্রি করে দেয়, তাহলে বিক্রিলব্ধ মূল্য পুরোটা গরিব-মিসকিনদের সদকা করে দিতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানির সকল মাসয়ালা জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
(কিতাবুল আছল: ৫/৪০৮; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৭০; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৫; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০১; আলবাহরুর রায়েক: ৮/১৭৮)