ঢাকা মেইল ডেস্ক
২৮ মে ২০২৪, ০৮:৪৩ পিএম
গোপালগঞ্জের শীর্ষ আলেম এবং কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা শামছুল হক ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় গওহরডাঙ্গা মাদরাসা ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, চার ছেলে চার মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র, ভক্ত, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মাওলানা শামছুল হক গওহরডাঙ্গা মাদরাসায় পড়ালেখা শুরু করেন এবং এখান থেকে তিনি ১৯৬৯ সালে দাওরায় হাদিস শেষ করেন। তিনি লালবাগ মাদরাসায়ও বেশ কিছু দিন ছদর ছাহেব হুজুর খ্যাত মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.-এর সান্নিধ্যে কাটান এবং আত্মশুদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইলম অর্জন করেন।
শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার বড়গুনি মাদরাসার মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি নিজ গ্রামে পুরুষ ও মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মাওলানা শামছুল হক কর্মজীবনের শুরু থেকেই কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের প্রথম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেন। হাইআতুল উলয়ার স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষকদের বৃহৎ সংগঠন তানজিমুল মুদ্দাররিসিল কওমিয়া বাংলাদেশের সভাপতি, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন।
তার মৃত্যুতে গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশের সভাপতি, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব ও খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের আমির হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, মাওলানা শামছুল হক ছিলেন আমার বিশ্বস্ত, প্রজ্ঞাবান, চৌকস সহকারী। যেকোনো কাজে তার ওপর আস্থা রাখা যেত। তিনি একজন শক্তিশালী মেধাবী সংগঠক ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমি একজন আস্থাবান সহকারীকে হারালাম।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে গওহরডাঙ্গা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি উসামা আমীন বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের বোর্ডের অন্যতম মুরব্বি। তিনি মেধা এবং সামাজিক প্রজ্ঞা দিয়ে যেকোনো সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারতেন। তিনি হজরত ছদর ছাহেব হুজুর রহ. এর মিশনের একজন নিবেদিতপ্রাণ অভিভাবক ছিলেন। তিনি যেমন যোগ্য সংগঠক ছিলেন তেমনি হাদিসের দরসেও ছিলেন অসাধারণ। তার হাদিসের তাকরির ছিল মুগ্ধ করার মতো। নাহু, ছরফ, বালাগাত, মান্তেক সব বিষয়য়ের কিতাব ছিল তার মুখস্থ। তার ইন্তেকালে আমরা একজন দরদি অভিভাবক হারালাম।
আরও শোকপ্রকাশ করছেন, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস, মুফতি নুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুচ্ছালাম, বোর্ডের সহ সভাপতি মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা কবিরুল ইসলাম, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ঝিনাত আলী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ তাসনীম, তানজীমুল মুদাররিছিন বাংলাদেশের মাওলানা আতাউর রহমানসহ শীর্ষ উলামায়ে কেরাম।
জেবি