images

ইসলাম

জুমার দিনসহ ৫ সময়ে দরুদ পড়ার বিশেষ নির্দেশনা

ধর্ম ডেস্ক

১২ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫০ এএম

প্রিয়নবী (স.)-এর ওপর দরুদ পাঠ আল্লাহ তাআলার পছন্দনীয় আমলগুলোর অন্যতম। দরুদ পাঠের নির্ধারিত সময় নেই। তবে বিশেষ কিছু সময়ে দরুদ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং হাদিসে এ ব্যাপারে নির্দেশনা এসেছে। এখানে হাদিসের আলোকে দরুদ পাঠের উপযুক্ত কিছু সময় তুলে ধরা হলো।

জুমার দিন
আওস ইবনু আওস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমাদের দিনসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। এদিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এদিনই তাঁর রুহ কবজ করা হয়েছিল, এদিন শিঙায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে এবং এদিনই বিকট শব্দ করা হবে। কাজেই এদিন তোমরা আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ, তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। আওস ইবনে আওস (রা.) বলেন, লোকেরা বুঝতে চাচ্ছিল আপনার শরীর তো জরাজীর্ণ হয়ে মিশে যাবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ মাটির জন্য নবী-রাসুলদের দেহ হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ: ১০৪৭)

আরও পড়ুন: টানা ৩ জুমা ছেড়ে দিলে কী হয়

নবীজির নাম শুনলে
মালেক বিন হুয়াইরিস (রহ.)-এর সূত্রে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রাসুল (স.) মিম্বরে আরোহণ করেন। প্রথম ধাপে চড়েই বলেন, আমিন। অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে চড়ে বলেন, আমিন। অনুরূপ তৃতীয় ধাপেও চড়ে বলেন, আমিন। অতঃপর তিনি (এর রহস্য ব্যক্ত করে) বলেন, ‘আমার  কাছে জিব্রাইল উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ! যে ব্যক্তি রমজান পেল অথচ পাপমুক্ত হতে পারল না আল্লাহ তাকে ধ্বংস করুন।’ তখন আমি (প্রথম) আমিন বললাম। তিনি আবার বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতাকে অথবা তাঁদের একজনকে জীবিতাবস্থায় পেল অথচ তাকে দোজখে যেতে হবে, আল্লাহ তাকেও ধ্বংস করুন।’ এতে আমি (দ্বিতীয়) আমিন বললাম। অতঃপর তিনি বলেন, ‘যার কাছে আপনার (নাম) উল্লেখ করা হয় অথচ সে আপনার উপর দরুদ পাঠ করে না, আল্লাহ তাকেও ধ্বংস করুন।’ এতে আমি (তৃতীয়) আমিন বললাম।’ (ইবনে হিব্বান: ৯০৭)

মজলিস শেষে
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (স.) বলেছেন, যেসব লোক কোনো মজলিসে বসেছে অথচ আল্লাহকে স্মরণ করেনি এবং তাদের নবীর প্রতি দরুদও পড়েনি, তারা বিপদগ্রস্ত ও আশাহত হবে। আল্লাহ তাআলা চাইলে তাদের শাস্তিও দিতে পারেন কিংবা মাফও করতে পারেন। (তিরমিজি: ৩৩৮০)

আরও পড়ুন: দরুদ ও সালামের ৯টি বিস্ময়কর উপকার

আজানের পরে
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী কারিম (স.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শোনো, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বলো। অতঃপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করো। কেননা যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন..।’ (মুসলিম: ৭৩৫)

মোনাজাতের আগে
নামাজের পর মোনাজাতের আগে দরুদ পড়া দোয়ার আদবগুলোর অন্যতম। যা রাসুল (স.) সাহাবায়ে কেরামকে শিক্ষা দিয়েছেন। ফাজালাহ ইবনে উবাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, এক লোককে নবী (স.) তাঁর নামাজের মাঝে দোয়া করতে শুনলেন, কিন্তু নবী (স.)-এর ওপর সে দরুদ পড়েনি। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, এই ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অন্য কাউকে বলেন, তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান করে, তারপর রাসুল (স.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দোয়া করে। (তিরমিজি: ৩৪৭৭)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে রাসুলুল্লাহ (স.) এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।