images

ইসলাম

সূর্যগ্রহণ শুরু হলে যা করতে বলেছেন নবীজি

ধর্ম ডেস্ক

০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম

সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত একটি প্রক্রিয়া। আরবিতে চন্দ্রগ্রহণকে খুসুফ এবং সূর্যগ্রহণকে ‘কুসুফ’ বলা হয়। এ সময় হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী মুসলমানদের কিছু করণীয় রয়েছে। সূর্যগ্রহণের সময় নবীজির শেখানো আমলগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

নামাজ পড়া
দশম হিজরিতে যখন মদিনায় সূর্যগ্রহণ হয়, তখন রাসুলুল্লাহ (স.) ঘোষণা দিয়ে লোকদেরকে নামাজের জন্য সমবেত করেছিলেন। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (স.)-এর কাছে ছিলাম, এ সময় সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাকাত নামাজ আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেন, ‘কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত নামাজ আদায় করবে এবং দোয়া করতে থাকবে।’ (সহিহ বুখারি: ৯৮৩)

আল্লাহর জিকির ও ইস্তেগফার করা
আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর যুগে সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তিনি দাঁড়ালেন এ আশংকায় যে, কেয়ামতের মহাপ্রলয় বুঝি সংঘটিত হবে। তিনি (তাড়াতাড়ি) মসজিদে এলেন। অত্যন্ত দীর্ঘ কিয়াম, দীর্ঘ রুকু ও দীর্ঘ সেজদার সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। আমি আর কোনো সালাতে কখনো এরূপ দেখিনি। এরপর তিনি (রাসুল) বলেন, আল্লাহর প্রেরিত এসব নিদর্শনাবলী কারো মৃত্যুর জন্য হয় না, কারো জন্মের জন্যও হয় না। তিনি এগুলো প্রেরণ করেন তাঁর বান্দাদের সতর্ক করার জন্য। যখন তোমরা এসব নিদর্শনাবলীর কিছু দেখতে পাও তখন তোমরা আতংকিত হৃদয়ে আল্লাহর জিকির, দোয়া ও ইস্তেগফারে মশগুল হও।’ (সহিহ মুসলিম: ১৯৮৯)

অতএব সূর্যগ্রহণের সময়কে আনন্দ-উপভোগের উপলক্ষ মনে না করে সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত ‘সালাতুল কুসুফ’ পড়া সুন্নত। সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে নামাজ শেষ করলেও কোনো সমস্যা নেই। সূর্যগ্রহণ চলাকালীন বাকি সময়টুকুতে জিকির, দোয়া, তওবা-ইস্তেগফার, দান-সদকার মাধ্যমে কাটানো উত্তম।

সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের নামাজের পদ্ধতি
সূর্যগ্রহণের নামাজ দুই রাকাত। আজান ও ইকামত নেই। মাকরুহ ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে এই নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। দিনের নামাজ হওয়ার কারণে এই নামাজের কেরাত আস্তে পড়াই নিয়ম। তবে রুকু-সেজদা ও তেলাওয়াত যত সম্ভব দীর্ঘ করা উত্তম। সাধারণ নামাজের মতোই এই নামাজ। শুরু করতে হবে তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবর) বলার মাধ্যমে। তারপর সানা, এরপর যথারীতি আউজুবিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতেহা ও সুরা। এভাবে দুই রাকাত পড়বে। দ্বিতীয় রাকাতের সুরা রুকু-সেজদা সবকিছু প্রথম রাকাতের চেয়ে কম হবে। এরপর তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরাবে। (সূত্র: ইবনে কুদামা রচিত ‘আল-মুগনি’ (৩/৩২৩), ইমাম নববির রচিত ‘আল-মাজুম’ ৫/৪৮)