images

ইসলাম

রাতে রোজার নিয়ত করতে ভুলে গেলে করণীয়

ধর্ম ডেস্ক

২৭ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম

নিয়ত ফরজ রোজা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত। নিয়ত শব্দের অর্থ- মনের ইচ্ছা, সঙ্কল্প বা প্রতিজ্ঞা। এটি অন্তরের কাজ, জিহ্বার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোনো কাজের শুরুতে মনের মধ্যে যে ইচ্ছা পোষণ করা হয়, সেটাকেই নিয়ত বলা হয়। তাই কেউ মুখে নিয়ত না করলেও তার রোজা আদায় হয়ে যাবে। (আল-বাহরুর রায়েক: ২/৪৫২; আল-জাওহারুতুন নাইয়্যিরাহ: ১/১৭৬; রদ্দুল মুখতার: ৩/৩৩৯, ৩৪১; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৫)

রমজান মাসে সেহরি খাওয়াকেও অনেকে রোজার নিয়ত বলে গণ্য করেছেন। তবে সেহরি খাওয়ার সময় রোজা রাখার ইচ্ছা না থাকলে তা নিয়ত বলে গণ্য হবে না। (কিতাবুল ফিকাহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৮৮১)

আরও পড়ুন: সেহেরির সময় আছে ভেবে খেলে রোজা শুদ্ধ হবে?

ফরজ রোজার নিয়ত রাতে করাই উত্তম। কারণ, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, من لم يجمع الصيام قبل الفجر فلا صيام له অর্থাৎ ‘যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না, তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না। ( আবু দাউদ: ১/৩৩৩; আলবাহরুর রায়েক: ২/২৫৯-২৬০; বাদায়েউস সানায়ে: ২/২২৯)

তবে, নিয়তের সময়ের ব্যাপারে মাসয়ালা হচ্ছে- রাতে নিয়ত করতে না পারলে দিনে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলার দেড় ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করা যাবে। শর্ত হলো- সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়তের পূর্ব পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ না করতে হবে। (ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৫, রদ্দুল মুখতার: ৩/৩৪১)

নিয়তের সময় শুরু হয় পূর্বের দিনের সূর্যাস্তের পর থেকে। যেমন-মঙ্গলবারের রোজার নিয়ত সোমবার দিবাগত রাত তথা সূর্যাস্তের পর থেকে করা যায়। সোমবার সূর্যাস্তের পূর্বে মঙ্গলবারের রোজার নিয়ত করা যথেষ্ট নয়। কেননা, হাদিসে রাতে নিয়ত করার কথা বলা হয়েছে। (আলমুহিতুল বুরহানি: ৩/৩৪৩; রদ্দুল মুখতার: ২/৩৭৭)

আরও পড়ুন: রমজানের যে ৩ সময় দোয়া করলেই কবুল

প্রত্যেক রোজার নিয়ত পৃথকভাবে করতে হবে। কারণ প্রতিটি রোজা ভিন্ন ভিন্ন আমল (ইবাদত)। আর প্রতিটি আমলের জন্যই নিয়ত করা জরুরি। কেননা “সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।” (সহিহ বুখারি: ১/২; আলমুহাল্লা: ৪/২৮৫; মাবসুত, সারাখসি: ৩/৬০; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৫)

রোজার প্রচলিত নিয়তটি হলো— نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন আছূমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী’। 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রোজার নিয়তের ব্যাপারে সংশয় দূর করুন এবং বিশুদ্ধ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।