ধর্ম ডেস্ক
২২ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩১ পিএম
মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)
জুমার দিনকে দোয়া কবুলের দিনও বলা হয়। কেননা এই দিনে দোয়া কবুলের ঘোষণা রয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টায় যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল (স.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। (সহিহ বুখারি: ৬৪০০)
আরও পড়ুন: নবীজির প্রতি দরুদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত?
দোয়া কবুলের সেই সময় নিয়ে একাধিক মত থাকলেও অধিকাংশের মতে সময়টি হলো- আছরের নামাজের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.), আবু হুরায়রা (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), কাব আহবার (রহ), সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ)., মুজাহিদ (রহ) ও তাউস (রহ) প্রমুখ এই মত গ্রহণ করেছেন। (দ্রষ্টব্য: মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা:৫৫০৩-৫৫০৫, ৫৫১৪; আততামহিদ: ১৯/২০, ২৩-২৪; আল-ইস্তিজকার: ৫/৮২, ৮৬, ৯৭)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ: ১০৪৮, নাসাঈ: ১৩৮৯)
যেভাবে কাটাবেন জুমাবারের আছরের সময়টি
সালফে সালেহিনের অনেকেই আছরের নামাজ পড়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুরো সময়টাই দোয়া ও জিকিরে মগ্ন থাকতেন। সালেম (রহ) বলেন- وَكَانَ سَعِيدٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَمْ يُكَلِّمْ أَحَدًا إِلَى غُرُوبِ الشَمْسِ ‘সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ) জুমার দিন আছরের নামাজের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত (দোয়া-জিকিরে মগ্ন থাকতেন) কারো সাথে কথা বলতেন না। (আততামহিদ, ইবনে আবদুল বার: ১৯/২৩-২৪; আল-ইস্তিজকার, ইবনে আবদুল বার: ৫/৮৬-৮৭)
আরও পড়ুন: জুমার দিনে অন্তত তিনটি আমল ছাড়বেন না
লাইছ ইবনে আবি সুলাইম (রহ) বলেন- وَكَانَ طَاوُسٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَا يُكَلِّمُ أَحَدًا وَلَا يَلْتَفِتُ، مَشْغُولًا بِالدّعَاءِ وَالذِّكْرِ حَتّى تَغِيبَ الشّمْسُ ‘তাউস (রহ) (জুমার দিন) আসরের পর কারো সাথে কথা বলতেন না এবং এদিক ওদিক তাকাতেন না। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া ও জিকিরে মশগুল থাকতেন। (আল-ইস্তিজকার: ৫/৯৭; আততামহিদ: ২৩/৪৬)
অতএব, মুমিন মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত- জুমাবারে আছর নামাজ জামাতে পড়া এবং এরপর দোয়া-দরুদ ও জিকির-আজকারে মগ্ন থাকা। আল্লাহ তাআলা আমাদের জুমার দিনের দোয়ার গুরুত্ব বোঝার তাওফিক দান করুন। বেশি বেশি দোয়া-দরুদ, জিকির আজকারে মগ্ন থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।