images

ইসলাম

জান্নাত-জাহান্নামকে যেসব বিষয় দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৪ পিএম

আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মহান আল্লাহ জান্নাত তৈরি করে জিব্রাইল (আ.)-কে আদেশ দিলেন, তুমি গিয়ে তা দেখে আসো। অতএব তিনি সেখানে গিয়ে তা দেখে এসে বললেন, হে রব! আপনার ইজ্জতের কসম! এটি সম্পর্কে যে-ই শুনবে, সে-ই তাতে প্রবেশ করতে আকাঙ্ক্ষা করবে। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) জান্নাতকে কষ্টসাধ্য বিষয়সমূহ দ্বারা বেষ্টিত করে পুনরায় বললেন, হে জিব্রাইল! আবার গিয়ে তা দেখে আসো। অতএব তিনি আবার গিয়ে দেখে এসে বললেন, হে রব! আপনার মর্যাদার কসম! আমার খুব ভয় হচ্ছে যে, কেউই তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

তিনি (স.) বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ জাহান্নাম তৈরি করে বললেন, হে জিব্রাইল! তুমি গিয়ে তা দেখে আসো। অতএব তিনি তা দেখে এসে বললেন, হে আমার রব! আপনার ইজ্জতের কসম! কেউই তাতে প্রবেশ করতে চাইবে না। অতঃপর আল্লাহ একে লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা ইত্যাদি আকর্ষণে আচ্ছাদিত করে পুনরায় জিব্রাইল (আ.)-কে বললেন, যাও তা দেখে আসো! তিনি সেখানে গিয়ে তা দেখে এসে বললেন, হে রব! আপনার মর্যাদার কসম! আমার ভয় হচ্ছে যে, সকলেই তাতে প্রবেশ করবে, কেউই অবশিষ্ট থাকবে না। (আবু দাউদ: ৪৭৪৪; তিরমিজি, মেশকাত: ৫৬৯৬; বঙ্গানুবাদ মেশকাত: ৫৪৫২)

আরও পড়ুন
জান্নাতি হুর কেমন হবে
নবীজি যাদের জাহান্নামে দেখেছেন

এই হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, জান্নাত খুব আরাম আয়েশ, ভোগ বিলাস ও আকাঙ্ক্ষার জায়গা হলেও তাতে যাওয়া কষ্টকর। কঠোর নীতি পালনের মাধ্যমে বান্দা জান্নাতে যাওয়ার উপযুক্ত হয়। একইভাবে ভয়ংকর বিভীষিকাময় কঠিন জায়গার নাম জাহান্নাম। সেখানে কেউ যেতে না চাইলেও প্রবৃত্তির কারণে তাতে প্রবেশের উপযুক্ত হতে হয়। এজন্যই জিব্রাইল (আ.) আশংকা করেছেন যে, মানুষ কি তার প্রবৃত্তির বিরোধিতা করতে পারবে? মানুষ তো চায় অবৈধভাবে উপার্জন করতে, অবৈধভাবে নারী ভোগ করতে। নারীরা চায় নগ্ন হয়ে চলতে। মানুষের প্রবৃত্তির সহজাত চাওয়াই হলো- নিষিদ্ধ কাজগুলো করা। কিন্তু সত্য হলো- জান্নাতে যেতে হয় প্রবৃত্তির চাওয়াগুলোকে উপেক্ষা করে আর জান্নাতে যেতে হয় আল্লাহর আদেশ মেনে চলার মাধ্যমে। এজন্য আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, قَدْ اَفْلَحَ مَنْ زَكّٰىهَا وَ قَدْ خَابَ مَنْ دَسّٰىهَا ‘অবশ্যই সে সফল হয়েছে, যে নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা বিনষ্ট করেছে। (সুরা শামস: ৯-১০)

নফসকে বিনষ্ট করার অর্থ হলো- বিভিন্ন গুনাহ ও মন্দকাজে লিপ্ত হয়ে নিজের চিন্তা, কর্ম ও মন-মানসিকতাকে পাপাচ্ছন্ন করে ফেলা। মনের সকল ইচ্ছা ও চাহিদাকে অনুসরণ করে করে প্রবৃত্তি-রিপুকে শক্তিশালী করা এবং আকল ও বিবেককে রিপুর অনুগামী করা। এভাবে আল্লাহর হুকুম ও বিধান থেকে সরে গিয়ে নিজের কামনা ও বাসনার অনুগত হওয়া। (দ্র. তাফসিরে ইবনে কাসির: ৪/৮১৬; রুহুল মাআনি: ১৫/১৬৫; তাফসিরে উসমানি, পৃষ্ঠা-৭৯৩)