ধর্ম ডেস্ক
১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪২ পিএম
আল-কোরআন হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম। কোরআন তেলাওয়াতের অনেক ফজিলত রয়েছে। অনুবাদ পড়ে সেই ফজিলত পাওয়া যায় না। আসলে কোরআনের আয়াত, হাদিস শরিফ ও যেসব মাসনুন দোয়া-দরুদ মুখস্থের ফজিলতের কথা এসেছে, তার সবই মূল ভাষায় মুখস্থ করার সঙ্গে নিহিত; অনুবাদের সঙ্গে নয়।
তাই ‘আরবি পাঠ ছাড়া শুধুমাত্র কোরআনের অনুবাদ পড়লে কোরআন পাঠের সওয়াব পাওয়া যাবে না।’ (ফতোয়ায়ে শামি: ১/৪৮৬, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ৭/২১৪)
আরও পড়ুন: প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত
তবে হ্যাঁ, কোরআন বুঝার জন্য অনুবাদ পড়লে সেটির আলাদা সওয়াব পাওয়া যাবে। কেননা আল্লাহর কালাম অনুধাবন করা এবং তা থেকে উপদেশ গ্রহণের জন্য বুঝার চেষ্টা করা কোরআন-হাদিসেরই নির্দেশনা। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমি আপনার প্রতি এ বরকতপূর্ণ কিতাব নামিয়েছি; তারা যেন এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং জ্ঞানীরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা সোয়াদ: ২৯)
তবে তা তেলাওয়াতের মতো নয়। কোরআন তেলাওয়াতেরর মর্যাদা ও শান একেবারেই আলাদা। আল্লাহর কালামের প্রতিটি কথাই মহামূল্যবান। প্রতিটি অক্ষরের জন্য সওয়াব রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কোরআনের একটি হরফ তেলাওয়াত করবে, সে বিনিময়ে একটি নেকি পাবে। আর তা দশ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। নবীজি (স.) বললেন, আমি বলিনি যে ‘আলিফ-লাম-মিম’ একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ আর মিম একটি হরফ। (সুনানে তিরমিজি: ২৯১০, শুয়াবুল ঈমান: ১৯৮৩, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩০৫৫২)
আরও পড়ুন: নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পড়ার পুরস্কার
উক্ত হাদিসে কোরআন পাঠের ফজিলত আরবিতে পড়ার সঙ্গেই নিহিত—তা স্পষ্ট। শুধু অনুবাদ পড়ে এ ফজিলত পাওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, পবিত্র কোরআন সহিহ শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করা ফরজ। অন্তত নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য বিশুদ্ধ কোরআন শেখা আবশ্যক। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত— নিজে ও পরিবারের সদস্যদের কোরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ করার ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া। কমপক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য যে সুরাগুলোর প্রয়োজন, সেগুলো শুদ্ধ করে নেওয়া জরুরি, অন্যথায় সে গুনাহগার হবে। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/১১৮; ফতোয়া কাজিখান: ১/৬৭; মুকাদ্দামায়ে জাজারিয়া- পৃ. ১১)
শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘যারা সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করে, তারা নেককার সম্মানিত ফেরেশতাদের সমতুল্য মর্যাদা পাবে। আর যারা কষ্ট সত্ত্বেও কোরআন শুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা ও মেহনত চালিয়ে যায়, তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।’ (আবু দাউদ: ১৪৫৪)