০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম
মহান আল্লাহ জেনাকে হারাম করেছেন এবং বিয়েকে হালাল করেছেন। পাপাচার থেকে মুক্ত হয়ে পবিত্র ও সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার জন্য মুসলমানদের ওপর বিয়ের বিধান দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। এছাড়াও বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন গঠন করা নবীদের সুন্নত। বিয়ে নিয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, নিশ্চয় আপনার পূর্বে অনেক রাসুলকে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি। (সুরা রা’দ: ৩৮)
তবে, বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। যে কাউকে বিয়ে করার অনুমতি ইসলামে নেই। নিচে যেসব নারীকে বিয়ে করার অনুমতি ইসলামি শরিয়তে নেই, তাদের পরিচয় তুলে ধরা হলো।
ইসলামে যেসব নারীকে বিয়ে করা হারাম
ইসলামি শরিয়তে ১৪ নারীকে বিয়ে করা হারাম। ইসলাম তাদেরকে মাহরাম হিসেবে গণ্য করেছে। তাদের সঙ্গে অপরজনের দেখা-সাক্ষাৎ করা জায়েজ। তবে এই ১৪ জনের সঙ্গে বিয়ে করা নাজায়েজ বা হারাম।
তারা হলেন-
১. মা
২. ফুফু (বাবার বোন)
৩. খালা (মায়ের বোন)
৪. শাশুড়ি (স্ত্রী এর মা )
৫. দুধ-মা (যে মা ছোট বেলায় দুধ খাইয়েছিলেন)
৬. নিজের বোন
৭. নানি (মায়ের মা)
৮. দাদি (বাবার মা)
৯. নাতনি (আপন ছেলে ও মেয়ের কন্যা)
১০. দুধ-বোন
১১. মেয়ে
১২. ভাতিজি (আপন ভাই-এর মেয়ে)
১৩. ভাগ্নি (আপন বোনের মেয়ে)
১৪. ছেলের বউ
আরও পড়ুন: যেসব অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গেও সহবাস করা হারাম
একইভাবে একজন নারীর জন্য মাহরাম পুরুষ হলেন ১৪ জন। তারা হলেন-
১. বাবা
২. চাচা
৩. মামা
৪. শ্বশুর
৫. সহোদর ভাই
৬. নিজ দাদা
৭. নিজ নানা
৮. নিজ নাতি
৯. দুধ-ভাই
১০. ছেলে
১১. ভাইয়ের ছেলে
১২. বোনের ছেলে
১৩. মেয়ের জামাই
১৪. দুধ-ছেলে
১৪ নারী ছাড়াও আরও যাদের বিয়ে করা হারাম
এই ১৪ জন ছাড়াও একজন পুরুষের জন্য আরও কয়েক শ্রেণীর নারীর সঙ্গে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া হারাম। তারা হলেন-
আরও পড়ুন: হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে যে কাফফারা দিতে হবে
১. একসঙ্গে চারজনের বেশি নারীকে বিয়ে করা হারাম।
২. ঘনিষ্ঠতম দুই নারীকে একসঙ্গে বিয়ে করা হারাম। অর্থাৎ, এমন দুইজন দুধ সম্পর্কীয় বা নসবী (নিজ বংশের) নারীকে একসঙ্গে বিয়ে করা, যাদের কোনও একজনকে পুরুষ ধরা হলে অন্যজনের সঙ্গে তার বিয়ে বৈধ হবে না। যেমন- ফুফু-ভাতিজি ও আপন দুই বোনকে একসঙ্গে বিয়ে করা হারাম।
কারণ, এদের মধ্যে ফুফুকে যদি চাচা মনে করা হয় তাহলে চাচার সঙ্গে ভাতিজির বিয়ে হারাম, আবার ভাতিজিকে যদি ভাতিজা মনে করা হয়, তাহলে ফুফুর সঙ্গে ভাতিজার বিয়ে বৈধ নয় অথবা দুই বোনের মধ্যে কোনও একজনকে ভাই মনে করা হলে ভাইয়ের জন্য বোনকে বিয়ে করা হারাম।
৩. স্বাধীন নারীকে বিয়ে করার পর কোনও ক্রীতদাসীকে বিয়ে করা বৈধ হবে না।
৪. অন্য পুরুষের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বা স্বামীর মৃত্যুর পর নারীর ইদ্দতের সময় পূর্ণ হওয়ার আগে তাকে বিয়ে করা বৈধ হবে না।
৫. মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারীকে বিয়ে করা হারাম।
৬. কোনও নারীর জন্য নিজের গোলাম বা দাসকে বিয়ে করা হারাম।
৭. স্বামীর জন্য নিজের তিন তালাক দেওয়া স্ত্রীকে বিয়ে করা হারাম। (অন্য কারও সঙ্গে তার (স্ত্রী) বিয়ে হয়ে সেই স্বামী তাকে তালাক দেওয়া বা সেই স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত পালনের পূর্বে প্রথম স্বামী তাকে বিয়ে করতে পারবে না।)
৮. যে নারীর সঙ্গে জেনা করা হয়েছে বা যৌন উত্তেজনার সঙ্গে যে নারীকে স্পর্শ বা চুমু দেওয়া হয়েছে- এমন নারীর মেয়ে, নাতনি বা মা, নানীকে বিয়ে করা হারাম।
(ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/২৭৩, তাবঈনুল হাকায়েক: ২/১০১, ফতোয়ায়ে রাহমানিয়া: ২/ ৮৩)