ধর্ম ডেস্ক
০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৩৭ এএম
মা-বাবার জন্য দোয়া করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। কেবল সুসন্তানরাই মা-বাবার অবদান ভুলতে পারেন না। মা-বাবার আদর-যত্ন ভুলে যান না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লুকমান: ১৪)
সন্তানের উচিত প্রত্যেক নামাজের পর দু’হাত তুলে মা-বাবার জন্য দোয়া করা। সন্তানের দোয়ার বরকতে আল্লাহ তাআলা তাদের নেয়ামত ও সুখ-শান্তি বাড়িয়ে দেন। হাদিসে এসেছে, ‘মানুষের মৃত্যুর পর তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে, হে প্রভু! এটা কী জিনিস? তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে’। (আল-আদাবুল মুফরাদ: ৩৬)
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মানুষ মৃত্যু বরণ করলে— তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল কখনো বন্ধ হয় না। ১) সাদকায়ে জারিয়া (এমন দান-অনুদান; যার সওয়াব চলমান থাকে) ২) এমন জ্ঞান— যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং ৩) নেক সন্তান— যে তার মৃত বাবা মায়ের জন্য সবসময় দোয়া এবং আমল করে।’ (মুসলিম: ৪৩১০)
এখানে মা-বাবার জন্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত তিনটি দোয়া তুলে ধরা হলো।
১. প্রশান্তির দোয়া: رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا উচ্চারণ: ‘রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)
২. ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া: رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
৩. মা-বাবাসহ সব মুমিনের জন্য দোয়া: رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا উচ্চারণ: ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনাও ওয়ালিল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাত। ওয়ালা তাজিদিজ জা-লিমিনা ইল্লা তাবারা।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষদের ক্ষমা করুন এবং আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ: ২৮)
অতএব, সুসন্তান হিসেবে বাবা-মায়ের জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেককে মা-বাবার জন্য কোরআনে বর্ণিত উল্লেখিত দোয়াগুলো সবসময় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।