images

ইসলাম

জুমার দিনের শেষ সময় যেভাবে কাটাতেন সালফে-সালেহিনরা

ধর্ম ডেস্ক

০৪ আগস্ট ২০২৩, ০১:১৫ এএম

মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)

জুমার দিনকে দোয়া কবুলের দিনও বলা হয়। কেননা এই দিনে দোয়া কবুল করা হয়। দোয়া কবুলের সেই সময় নিয়ে একাধিক মত থাকলেও অধিকাংশের মতে সময়টি হলো- আছরের নামাজের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.), আবু হুরায়রা (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), কাব আহবার (রহ), সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ)., মুজাহিদ (রহ) ও তাউস (রহ) প্রমুখ এই মত গ্রহণ করেছেন। (দ্রষ্টব্য: মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা:৫৫০৩-৫৫০৫, ৫৫১৪; আততামহিদ: ১৯/২০, ২৩-২৪; আল-ইস্তিজকার: ৫/৮২, ৮৬, ৯৭)

সালফে সালেহিন যেভাবে সময়টার কদর করতেন
সালফে সালেহিনের মধ্যে যাঁদের মতে জুমাবারে দোয়া কবুলের সময় আছরের পরে তাঁরা আছরের নামাজ পড়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুরো সময়টাই দোয়া ও জিকিরে মগ্ন থাকতেন। সালেম (রহ) বলেন- وَكَانَ سَعِيدٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَمْ يُكَلِّمْ أَحَدًا إِلَى غُرُوبِ الشَمْسِ ‘সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ) জুমার দিন আছরের নামাজের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত (দোয়া-জিকিরে মগ্ন থাকতেন) কারো সাথে কথা বলতেন না। (আততামহিদ, ইবনে আবদুল বার: ১৯/২৩-২৪; আল-ইস্তিজকার, ইবনে আবদুল বার: ৫/৮৬-৮৭)

লাইছ ইবনে আবি সুলাইম (রহ) বলেন- وَكَانَ طَاوُسٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَا يُكَلِّمُ أَحَدًا وَلَا يَلْتَفِتُ، مَشْغُولًا بِالدّعَاءِ وَالذِّكْرِ حَتّى تَغِيبَ الشّمْسُ ‘তাউস (রহ) (জুমার দিন) আসরের পর কারো সাথে কথা বলতেন না এবং এদিক ওদিক তাকাতেন না। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া ও জিকিরে মশগুল থাকতেন। (আল-ইস্তিজকার: ৫/৯৭; আততামহিদ: ২৩/৪৬)

অন্যান্য অনেক বুজুর্গের মতো শায়খুল হাদিস হযরত মাওলানা জাকারিয়া কান্ধলবী (রহ) এবং তাঁর আব্বাজান হজরত মাওলানা ইয়াহইয়া কান্ধলবী (রহ)-ও জুমার দিন আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া ও জিকিরে মগ্ন থাকতেন। সেদিন আছরের পরের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম মাগরিবের পরে করতেন।

উল্লেখ্য, জুমার দিন দোয়া কবুলের সময় নিয়ে আরেকটি অভিমত আছে। সেটি হলো- খতিব খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠার পর থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত। আবু মুসা আশআরি (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.), আবু বুরদা (রহ) প্রমুখ এই মতের প্রবক্তা। (দ্রষ্টব্য: মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৫৫০৬, ৫৫০৭; আততামহিদ, ইবনে আবদুল বার: ১৯/২২)

এই মতের প্রবক্তারাও তাঁদের মতানুযায়ী নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিতে সৌভাগ্য লাভ করার জন্য ব্যাকুল থাকতেন। মোটেও সময় নষ্ট করতেন না। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকেও জুমার দিনকে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। দোয়া কবুলের সময়ে দোয়া-জিকিরে মশগুল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।