images

ইসলাম

কোরবানির পশুর রশি ব্যবহার করা যাবে?

ধর্ম ডেস্ক

০৩ জুলাই ২০২৩, ০৫:২৪ পিএম

আল্লাহর জন্য জান ও মাল উৎসর্গ করার মধ্যেই মুমিন জীবনের সার্থকতা। আল্লাহ তাআলা তাদেরকেই জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন যারা আল্লাহর জন্য খরচ করে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয়বস্তু উৎসর্গ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত...।’ (সুরা তাওবা: ১১১)

এখানে আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত ও দয়ার কথা বর্ণনা করা হচ্ছে যে, তিনি মুমিনদেরকে তাদের জান ও ওই সম্পদ ব্যয়ের বিনিময়ে জান্নাত দেওয়ার ওয়াদা করছেন, যেই জান ও মাল স্বয়ং তিনিই দান করেছেন। মূলত আল্লাহ তাআলা চান যে, বান্দা আল্লাহর জন্য তাঁরই দেওয়া অর্থসম্পদ খরচ করতে কৃপণতা না করুক। কোরবানির পশুর রশি ব্যবহার, কুরবানীর গরুর রশি ব্যবহার 

কাজেই বান্দা আল্লাহর রাস্তায় যা-ই কোরবানি করুক না কেন, নিশ্চয়ই তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পুরোপুরিই কোরবানি করবে। কোরবানি করার পরেই হিসাব হবে যে- কোরবানিকৃত পশুর কোন জিনিসটি খাওয়ার বা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। এই হিসাবটা কোরবানির আগে নয়, বরং পরে করাই উচিত। কেননা যেকোনো ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য প্রথমে নিয়তের বিশুদ্ধতা জরুরি। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে না পৌঁছে তাদের (কোরবানির পশুর) গোশত আর না তাদের রক্ত, বরং তাঁর কাছে তোমাদের ‘তাকওয়াই’ পৌঁছে।’ (সুরা হজ: ৩৭) বিখ্যাত মুফাসসির হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘এখানে ‘তাকওয়া’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ইখলাস তথা নিয়তের বিশুদ্ধতা।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)

তাই কোরবানির আগে নিয়তের বিশুদ্ধতা ঠিক রাখতে হবে। পরে কোরবানিকৃত পশুর গোশত, চামড়া ও পশুর ব্যবহৃত জিনিসগুলোর ব্যাপারে শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। যেমন- ইসলামি শরিয়তে কোরবানিদাতার জন্য গোশত খাওয়া জায়েজ আছে, কিন্তু গোশত বিক্রি করার নাজায়েজ। একইভাবে কোরবানির পশুর চামড়া, রশি সবকিছুই নিজে ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু বিক্রি করা নাজায়েজ। বিক্রি করলেও ওই টাকাটা সদকা করে দিতে হবে।

আলেমদের বক্তব্য হলো-কোরবানির পশুর জন্য ব্যবহৃত চামড়া, রশি ইত্যাদি সদকা করে দেওয়াই উত্তম। ফতোয়ার কিতাবে রয়েছে, কোরবানির পশুর রশি সদকা করে দেওয়া মোস্তাহাব। কেউ যদি বিক্রি করে দেয়, তাহলে তার দাম সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর যদি রশি নিজে ব্যবহার করতে চায়, তাহলে করতে পারবে এবং যদি কাউকে হাদিয়া দিতে চায় তাও পারবে। (হিন্দিয়া: খ.৫ পৃ-২৯৯, শামি: খ.৬ পৃ-৩২৯)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানির যাবতীয় মাসয়ালা জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।