images

ইসলাম

যে আমলে কবুল হজের সওয়াব 

ধর্ম ডেস্ক

২১ জুন ২০২৩, ০৫:২৮ পিএম

আল্লাহ তাআলা বান্দার ভালো কাজের সওয়াব দিতে কার্পণ্য করেন না। কিছু নেক আমলের জন্য তিনি অনেক বেশি সওয়াব দিয়ে থাকেন। একটি আমলের ব্যাপারে হাদিসে বলা হয়েছে, আমলটি করলে আল্লাহ তাআলা কবুল হজের সওয়াব দান করেন। সেটি কী? সেটি হলো- মা-বাবার দিকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সন্তুষ্টির নজরে তাকানো। কবুল হজের সওয়াব 

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে সন্তান তার পিতামাতার দিকে সশ্রদ্ধ ও ভালোবাসার নজরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহপাক তার আমলনামায় একটি কবুল হজের সওয়াব লিখে দেন। এ কথা শুনে উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (স.)! সে যদি ওইভাবে দৈনিক ১০০ বার তাকায় তাহলে কি সে ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে? উত্তরে মহানবী (স.) বললেন হ্যাঁ! যদি দৈনিক ১০০ বারও তাকায়, তাহলে সেই সন্তান ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে।’ (শুআবুল ঈমান: ৭৪৭২; মেশকাতুল মাসাবিহ: ৪৯৪৪)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সাওয়াব দান করেন।’ (বায়হাকি-মেশকাত, পৃষ্ঠা-৪২১) কবুল হজের সওয়াব 

সুবহানাল্লাহ! আমরা জানি যে, কবুল হজের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। নবীজি (স.) জানিয়েছেন, ‘জান্নাতই হচ্ছে মকবুল হজের একমাত্র প্রতিদান।’ (সহিহ বুখারি: ১৭৭৩, সহিহ মুসলিম: ৪৩৭)

মায়ের চেয়ে বড় আপন পৃথিবীতে কেউ নেই। সন্তানকে গর্ভে ধারণ করা থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে মায়ের নিশ্বাসজুড়ে থাকে সন্তান। পৃথিবীর আলো আঁধারে সন্তানের বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা যাঁর, তিনি মা। তাই মাকে এত বড় সম্মান দিয়েছে ইসলাম। 

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্ট ভোগ করতে করতে তাকে গর্ভধারণ করে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শোকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লোকমান: ১৪) কবুল হজের সওয়াব 

আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (স.) এর কাছে এসে বলল- আমি জিহাদে অংশ নিতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। তখন রাসুল (স.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?’ লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। তখন রাসুল (স.) বললেন, ‘তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট যুদ্ধ-সংগ্রামে যেতে না পারার অপারগতা পেশ করো। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরা এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং মায়ের সেবা করো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ১৩৩৯৯)

অতএব সন্তান নিজের দুঃখে, সুখে সর্বাবস্থায় বাবা-মার দিকে যদি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির নজরে তাকাবে, তাহলে সন্তানের আমলনামায় কবুল হজের সওয়াব লিখে দেওয়া হয়। এমনকি সে সন্তান যদি পিতামাতার দিকে ১০০ বারও তাকায়, তার আমলনামায় ১০০ কবুল হজের সওয়াব দেওয়া হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মা-বাবার যথাসম্ভব সেবা করার, অনুগ্রহ ও ভালোবাসার নজরে দেখার এবং তাদের জন্য সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।