ফিচার ডেস্ক
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
নদীতে স্যামন মাছ ধরতে কানাডা প্রবাসী এক বাংলাদেশি গবেষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম ড. সাদাত রবিন (৪১)।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে ভেডার রিভার ক্যাম্প গ্রাউন্ড ও গ্রেট ব্লু হেরন ন্যাচার রিসার্ভের কাছাকাছি স্থানে তিনি মাছ ধরার জন্য নদী পার হচ্ছিলেন। ভেডার নদীর স্রোতের টানে তিনি হারিয়ে যান। অনেক খোঁজা-খুঁজির পর উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
কানাডার বাংলাদেশি প্রবাসী কমিউনিটি থেকে এই তথ্য জানা গেছে। কমিউনিটিগুলো এখন শোকের মাতম চলছে।
জানা গেছে, ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পূর্বে মনোরম শহর চিলিওয়াক। যার চারপাশে পাহাড়, নদী আর সবুজ উপত্যকা ঘেরা। সেখানকার জনপ্রিয় মাছ ধরার স্থান ভেডার নদী। সেই নদীর প্রবল স্রোতেই চিরবিদায় নিলেন প্রখ্যাত ফার্মেসি গবেষক ড. সাদাত রবিন (৪১)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মাছ ধরার সময় নদী পার হওয়ার চেষ্টায় তিনি প্রবল স্রোতে ভেসে যান।
চিলিওয়াক ফায়ার ডিপার্টমেন্ট, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম, বিসি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও আরসিএমপি দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে সকাল প্রায় ১০টার দিকে রেল ব্রিজের কাছে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

চিলিওয়াক পুলিশ জানায়, ‘সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিতে নদীর পানির স্তর ও স্রোতের গতি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে। নাগরিকদের আমরা সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ড. সাদাত রবিন ছিলেন কানাডার ফার্মেসি গবেষণা জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র — একাধিক আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ, ফেলোশিপ, পিএইচডি, পোস্ট ডক ও প্যাটেন্ট অর্জনের মাধ্যমে তিনি নিজের মেধা ও মানবিকতার আলো ছড়িয়ে গেছেন।
তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবাসী এই বিজ্ঞানী সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন তারা। তার সম্পর্কে লিখেছেন, ‘তিনি ছিলেন ভদ্র, মানবিক ও নিরহঙ্কার। নিজের সাফল্যকে সমাজের কল্যাণে বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশির কৃতিত্ব
ভ্যাঙ্কুভারপ্রবাসী গবেষক ড. মো. আবু আলী খান লিখেছেন, ফার্মেসি জগতের আলোকিত আইকন ড. সাদাত অকালে ঝরে গেলেন তার প্রিয় শখের কাছে হেরে গিয়ে। রবিনের মধ্যে মেধা, মানবতা ও আচরণের এক অপূর্ব সমন্বয় ছিল।
বাংলাদেশি-কানাডিয়ান কমিউনিটিতে তিনি ছিলেন এক অনুকরণীয় নাম। তার স্ত্রী মৌসুমি, যিনি নিজেও একজন ফার্মাসিস্ট — এই দম্পতিকে সবাই চিনতেন ‘সাফল্যের প্রতীক’ হিসেবে।
বন্ধুবৎসল, প্রকৃতিপ্রেমী, প্রাণবন্ত রবিনের প্রিয় শখ ছিল মাছ ধরা — সেই শখই কেড়ে নিল তার জীবন। তার মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
এজেড