images

প্রবাস

২২ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে পর্তুগাল

ঢাকা মেইল ডেস্ক

২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৮ এএম

পর্তুগালের সরকারের সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা- ইএমটি (Instituto da Mobilidade e dos Transportes) ২২ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিয়ে পর্তুগালে ড্রাইভিং লাইসেন্স এক্সচেঞ্জ করার জন্য জমা দিয়েছিল। ইএমটি’র পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে তাদের এই জালিয়াতি।

পর্তুগালে অনেকেই ফুড ডেলিভারি ও ট্যাক্সি চালক হিসেবে পেশা হিসেবে বেছে নেন। আবার অনেক পর্তুগিজ প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে হলেও পর্তুগিজ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। এছাড়া নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি চালাতেও প্রয়োজন ড্রাইভিং লাইসেন্স। পর্তুগালে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে লিখিত ও প্র‍্যাক্টিকাল পরীক্ষা দিতে হয়, যা অনেকের জন্য সহজ নয়। তবে পর্তুগালে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা সহজেই নিজেদের বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সকে পর্তুগিজ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারেন। পর্তুগাল ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি থাকায় এই সুবিধা পাওয়া যায়। এজন্য পর্তুগালে কোনো লিখিত বা প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হয় না।  

এই সুযোগ কাজে লাগাতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন এই ২২ জন বাংলাদেশি। পর্তুগালে বাংলাদেশ দূতাবাস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ইএমটি ২২ জনের তালিকা দূতাবাসে পাঠিয়েছে। যেখানে তাদের সবার  বাংলাদেশের ড্রাইভিং লাইসেন্স  নম্বর একই। এই ঘটনাকে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে দেখছে সংস্থাটি। ইএমটি দূতাবাসকে জানিয়েছে যে তারা উল্লিখিত ২২ জনের বিরুদ্ধেই আইনগত পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস এ কারণে তালিকাভুক্তদের জরুরি ভিত্তিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এই ২২ জন হলেন— ১. তোফাজ্জল মিয়া, ২. মো. জায়েদ সর্দার, ৩. মো. আব্দুল কাদের, ৪. সৈয়দ আবিদুর রহমান, ৫. মোহাম্মদ সুমন, ৬. শেখ বদরুল আহমেদ নাদিম, ৭. আরিফ ভূঁইয়া, ৮. আশিকুর রহমান, ৯. মো. আবেদ রেজা, ১০. মো. মনসুর আহমেদ, ১১. মো. মাহবুবুর রহমান, ১২. সাইফুল আহমেদ, ১৩. জামাল হোসেন, ১৪. তাহমির আহমেদ রাজু, ১৫. তারেক রহমান, ১৬. মো. বায়েজিদ ভূঁইয়া, ১৭. জাবের আলী, ১৮. আব্দুল ওয়াহিদ, ১৯. মো. আসাদুজ্জামান, ২০. মো. ফরহাদ উদ্দিন মজুমদার, ২১. ফয়সাল আহমেদ, ২২. রুমোন আকতার।

এই ঘটনাকে ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেবল অভিযুক্তদের নয়, পুরো কমিউনিটির জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একইসঙ্গে নতুন লাইসেন্স সংগ্রহ ও নবায়ন প্রক্রিয়া আরও কঠোর হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রবাসীরা। লিসবনের বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজন নেতা বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ অভিহিত করে জানিয়েছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুনাম রক্ষা করতে নিয়ম মেনে সঠিক প্রক্রিয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করা ছাড়া বিকল্প নেই।

জানা গেছে, দেশটির সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ইএমটি’র নিয়ম অনুযায়ী, পর্তুগালে বৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা, বৈধ বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মূল কপি, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে লাইসেন্সের সত্যায়িত কপি, রেসিডেন্স পারমিটের কপি,  ট্যাক্স নম্বরের কপি, মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে বাংলাদেশের ড্রাইভিং লাইসেন্স এক্সচেঞ্জের জন্য আবেদন জমা দিতে হয়। সকল ডকুমেন্ট যাচাই করে পর্তুগিজ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয় ইএমটি।

সিএ/এফএ