০৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
কানাডার ক্যালগেরিতে আলবার্টা আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ক্যালগেরির উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে আলোচনা সভা ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের উপর ভিডিও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ একাত্তরের সকল শহীদ ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে পরাধীনতার গ্লানি থেকে জাতিকে মুক্ত করে তিনি এনে দিয়েছেন রক্তিম লাল-সবুজের পতাকা খচিত স্বাধীন সার্বভৌম এক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও এবিএম কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. বাতেন, আলবার্টা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কাদির, সাধারণ সম্পাদক এন্থনি জ্যাকব, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা রফিক, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মাহফুজুল হক মিনু, মাহবুবুল হক খোকন, কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান, রাসেল রূপক, শুভ্র দাস শুভ প্রমুখ।
আলবার্টা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এন্থনি জ্যাকব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আদর্শ, চেতনা ও দর্শনের নাম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তিনি নিজেই একটি ইতিহাস। তার জন্ম না হলে হয়তো আজ বাংলাদেশ হতো না।
তারই নির্দেশনায় তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আগমন ঘটেছিল মধুমতি আর ঘাগোর নদীর তীরে অবস্থিত অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। নিভৃত পল্লীর ছায়া ঢাকা গাঁয়ে, কাশফুলের সুভ্রতার মোহমুগ্ধ বাঁকে, পাখির কলতানে মুখরিত নিকুঞ্জ আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই শিশু। তিনি না হলে আজকের বাংলাদেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতো না। তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ মূলত ছিল পুরো জাতিকেই মুক্তিবাহিনী হয়ে ওঠার আহ্বান।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ রফিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরম দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, বলিষ্ঠ শপথে শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার ঐকান্তিক চেতনা ও প্রেরণা জাগিয়েছে। তাই তো নিজের জীবন বিপন্ন করে বাঙালি জাতির জন্য এনে দিয়েছেন মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক সফলতা। কেই বা জানত এ শিশুটি একদিন হয়ে উঠবেন বিশ্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক সুমহান অংশ।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সমাজসেবক ও এবিএম কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. আব্দুল বাতেন বলেন, খোকা (শেখ মুজিবুর রহমান) নামক এ শিশুটি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম শেখ পরিবারে শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন। খোকার পুরোনাম শেখ মুজিবুর রহমান। অতঃপর টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে ওঠেন বিশ্ব ইতিহাসের কিংবদন্তি মহানায়ক ও মহাপুরুষ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালির বঙ্গবন্ধু নয়, তিনি বিশ্ববরেণ্য রাজনীতিক ‘বিশ্ববন্ধু’ উপাধিতেও বিশ্বনন্দিত। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্ব হলো তিনি শুধু বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের একজন স্বপ্নদ্রষ্টাই ছিলেন না, তিনি বাঙালি জাতিকে অনন্য সাধারণ ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আবীর খন্দকার, ফাহিম করিম জয়, আব্দুস সালাম এবং রোজিনা মিনাসহ আরো অনেকে।