images

রাজনীতি

ঢাকা-১২: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীতেই ভরসা

কাজী রফিক

১১ মে ২০২৩, ১০:০৫ এএম

চলতি বছরকে বলা হচ্ছে রাজনীতির বছর। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাতে উল্টাতে দেখা মিলতে পারে রাজনীতির নানা মেরুকরণের। নতুন বছরের শুরুতেই ভোট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা সমীকরণ, আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে এখন থেকেই। ভোটের প্রায় আট মাস আগেই জমজমাট হয়ে উঠেতে শুরু করেছে রাজনীতির মাঠ। সংসদ সদস্যদের মধ্যে কারা থাকছেন, কোন কোন আসনে পরিবর্তন হচ্ছে- আলোচনার মূল বিষয় এখন এটাই।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে চায়। দলটি ইতিমধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছে। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন প্রচারের তাগিদ দিয়েছেন। সে হিসেবে কাজও শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের মাঠে আছে বিএনপি। ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অবস্থান কি হবে তা সময়ই বলে দেবে। জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলও নিজেদের মাঠ গোছাতে প্রস্তুত।

দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০টি ঢাকায়। এরমধ্যে ঢাকা-১২ জাতীয় সংসদের ১৮৫নং আসন। রাজধানীর তেজগাঁও, ফার্মগেট, শেরে বাংলা নগরের একাংশ ও সাবেক রমনা এলাকা নিয়ে আসনটি গঠিত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬নং ওয়ার্ড এ আসনের অধিভুক্ত। সরকারপ্রধানের বাসভবন গণভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, সংসদ সদস্যদের বাসভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ আসনেরই অধিভুক্ত। ফলে আসনটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই বিচার করে যেকোনো রাজনৈতিক দল।

আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের টানা তিন মেয়াদের সবচেয়ে বেশি সময় ও সফলতম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ধরা হয় তাকে।

২০০৮ সালে বাংলাদেশের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান খান কামাল। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১২ জানুয়ারি তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান। আসাদুজ্জামান ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় শপথ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সাহারা খাতুনকে। তিনি দায়িত্ব পালন করেন সাড়ে তিন বছর। পরে মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা হয়। ১৪ মাসের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর। পরে তাকেও সরানো হয়। বেছে নেয়া হয় আসাদুজ্জামান খান কামালকে। প্রায় আট বছর ধরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়টির মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দল ও সংসদীয় আসনের জন্যও কাজ করে চলেছেন তিনি।

আসনটির অধিভুক্ত ৩৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোক্তার সরদার ঢাকা মেইলকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদ সদস্য হিসেবে সফল। তার হাত ধরেই আসনটির বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই আসনটির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। তার হাত ধরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়কসহ সকল উন্নয়ন কাজ হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-১২ আসন থেকে আসাদুজ্জামান খান কামালের বিকল্প দেখেন না তিনি। স্থানীয় সরকারের এই জনপ্রতিনিধি বলেন, আগামীবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই এই আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন এবং তিনি জয়ী হবেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-১২ আসনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাইরে কোনো কিছুই ভাবা হচ্ছে না। সবকিছু ঠিক থাকলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে পুনরায় নির্বাচনের মাঠে নামবেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তার উপর আস্থা রয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর, থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ দলের সকল ভাতৃপ্রতীম ও সহযোগী সংগঠনের।

যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব গত সংসদ নির্বাচনে এ আসনটিতে আসাদুজ্জামান খান কামালের বিপক্ষে প্রার্থী ছিলেন। যদিও ভোটের মাঠে আসাদুজ্জামান খান কামাল পেয়েছিলেন এক লাখ ৯১ হাজার ৯৯৫ ভোট। আর বিএনপির প্রার্থী নীরব পেয়েছিলেন ৩২ হাজার ৬৭৮ ভোট।

আগামী সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে সাইফুল আলম নীরবই এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।

কারই