images

রাজনীতি

সমাবেশ শুরু ১১টায়, ১০ দফা কর্মসূচি দেবে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৫২ পিএম

দফায় দফায় আলোচনার পর অবশেষে আগামীকাল রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তবে এ ক্ষেত্রে রয়েছে শর্তের বেড়াজাল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির সময়ে যে ২৬ শর্ত দেওয়া হয়েছিল সেগুলো গোলাপবাগের সমাবেশে বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ। এসব শর্ত মেনেই আগামীকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গোলাপবাগে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি।

এদিকে, বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যারা শরীক হতে চান তাদের সবাইকে আগামীকালের সমাবেশে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সেই সঙ্গে ঢাকাবাসীকেও সমাবেশে যোগ দেওয়া আহ্বান জানিয়েছে তিনি। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা জানিয়েছেন, আগামীকাল রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু হবে বেলা ১১টায়। এই সমাবেশ থেকে দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

BNP Assemblyখন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামীকাল ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে সরকারের বিদায়ের জন্য কতগুলো দফা ঘোষণা করব। আমাদের সাথে যারা যুগপৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত এবং ইতোমধ্যে আমাদের সাথে যাদের আলোচনা হয়েছে, সে সকল দলগুলো যুগপৎভাবে আমাদের ১০ দফা প্রণয়ন করেছি- তা ঘোষণা করবেন। দফাগুলো আদায়ের জন্য, আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য তারা সকলেই অংশগ্রহণ করবেন। যার যার অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন হবে। আগামী দিনে ওই দলগুলো তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন, দফাগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবেন।

এর আগে শুক্রবার দফায় দফায় আলোচনার পর অবশেষে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পরে বিকেলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে, ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, গোলাপবাগে বিএনপিকে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে আগের শর্ত (সোহরাওয়াদী উদ্যানের অনুমতির সময় দেওয়া ২৬ শর্ত) বহাল থাকবে।

BNP Assemblyবৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সমাবেশের স্থান নির্ধারণে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠকে বসে বিএনপি। প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ওই বৈঠকের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু জানান তারা সমাবেশের জন্য নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে কমলাপুর স্টেডিয়ামের প্রস্তাব দিয়েছেন। আর ডিএমপির পক্ষ থেকে মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

পরবর্তীতে ডিএমপির প্রস্তাব অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাংলা কলেজের মাঠ পরিদর্শনে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুসহ একটি প্রতিনিধি দল। ওই সময় তারা কলেজ মাঠ ঘুরে দেখেন। সেই সঙ্গে মির্জা আব্বাস জানিয়েছিলেন, সমাবেশের জন্য কমলাপুর স্টেডিয়াম ও বাঙলা কলেজ মাঠ দুটোই তারা পরিদর্শন করেছেন। তবে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার পর স্থান চূড়ান্ত করা হবে।

BNP Assemblyএর আগে রাতে বিএনপির প্রতিনিধিদল বাঙলা কলেজ পরিদর্শনে আসছে- এমন খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজ এলাকাজুড়ে। রাত ১১টায় সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন কলেজের সামনে। এ সময় তাদের একটি মিছিল টেকনিক্যাল মোড় এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ঘণ্টাখানেক পর বিএনপির প্রতিনিধি দল বাঙলা কলেজ মাঠ পরিদর্শন করে।

এদিকে, প্রস্তাবিত দুই সমাবেশস্থল পরিদর্শনের পর রাত ৩টার দিকে খবর আসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে তাদের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। রাজধানীর উত্তরা ও শাহজানপুরের নিজ নিজ বাসা থেকে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সবশেষ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানোর কথা জানিয়েছেন। ডিবি প্রধান জানান, গত ৮ ডিসেম্বর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার উস্কানিদাতা ও পরিকল্পনার অভিযোগে করা ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এমই/আইএইচ