images

রাজনীতি

‘বারোটা বাজছে’ নয়াপল্টনের ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪৫ পিএম

রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনার পর গতকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে এই এলাকার মার্কেট-দোকানপাট। বুধবার দুপুর থেকেই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এই এলাকায়। তখন থেকেই দোকান বন্ধ রেখেছেন দোকানিরা। বিকেল থেকে রাস্তার দুই পাশে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ রেখেছে পুলিশ। বিপাকে পড়েছেন এলাকার দোকানিরা।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। দুই পাশেই ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। বন্ধ রয়েছে পলোয়েল, গাজী, জোনাকি সুপারমার্কেটসহ সব দোকান পাট। এই এলাকার কিছু অফিস খোলা থাকলেও প্রায় অচলের মতো অবস্থা। আইডি কার্ড ছাড়া এই রোডে কাউকে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। আবার করা হচ্ছে নানা ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রাও।

নয়াপল্টন এলাকার ব্যবসায়ী শরিফ বলেন, ‘তাদের পলিটিক্যাল সমস্যার জন্য আমাদের জনগণের ক্ষতি হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছি না। দোকানপাট খুলতে পারছি না। আমাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ব্যবসার বারোটা বেজে যাচ্ছে।’ 

জোনাকি সুপার মার্কেটের আরেক দোকানি বলেন, ‘কালকে থেকে দোকান খুলতে পারছি না। বেচাকেনা নেই। ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কে জানে! দোকান না খুলতে পারলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’ এই এলাকার অনেক ব্যবসায়ী একই ধরনের অভিযোগ করেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের পর থেকে বন্ধ রয়েছে নয়াপল্টন সড়ক। সেই সঙ্গে রাস্তার দুই পাশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে পুলিশ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারীরা। রাজধানীর নয়াপল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে নয়াপল্টনের মুখ ব্যারিকেড দিয়ে অসংখ্য পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে, বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে বোমা পাওয়ায় কোনো নেতাকর্মীকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুল বোমা পাওয়া যায়। এ জন্য এই মুহূর্তে কাউকে কার্যালয়ের আশপাশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ক্রাইম সিন পুরো এলাকা নিরাপত্তার খাতিরে ঘিরে রেখেছে। কবে-কখন জায়গাটি নিরাপদ ঘোষণা করা হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে জানিয়েছে। তৃতীয় কোনো ভেন্যুর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠের কথাও আলোচনায় রয়েছে। এর মধ্যেই বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিকেলের দিকে সেখানে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ওই সময় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রায়টকার দিয়ে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ আরও জোরালো হয়। এতে পুরো এলাকা যেন রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

টিএই/এমএ