জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:০৭ পিএম
নয়াপল্টনে সংঘর্ষের পর একে একে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে তল্লাশি করে একে একে এসব নেতাদের আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর কার্যালয়ের ভেতরে আটকে পরা প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি।
এর আগে বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে না পেরে সামনের ফুটপাতে বসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সমাবেশ বানচাল করতে পুলিশ নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। টিয়ারশেল মেরেছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে। জোর করে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। আমাদের শিমুল বিশ্বাসসহ অনেক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।
এর কিছু আগেই শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ বেশকিছু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। সব নেতাদের আটকের পর কাউকে প্রিজন ভ্যানে করে আবার কাউকে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে জানিয়েছে। তৃতীয় কোনো ভেন্যুর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠের কথাও আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যেই বুধবার নয়াপল্টনে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সেখানে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ওই সময় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রায়টকার দিয়ে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ আরও জোড়ালো হয়। এতে পুরো এলাকা যেন রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এ সময় স্লোগান দিয়ে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে নয়াপল্টন থেকে ফকিরাপুল মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দলীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকা। সেই সঙ্গে কার্যালয়ের মধ্যে আটকা পড়েন রুহুল কবির রিজভীসহ আরও অনেক নেতাকর্মী।
এদিকে, বুধবার বিকেলের ওই সংঘর্ষের পর নয়াপল্টন কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে একে একে অবরুদ্ধ নেতাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ বিএনপির।
অন্যদিকে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা অবধি বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তাসহ পল্টন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে। সেই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এই এলাকায় মোতায়েন রয়েছে।
বিইউ/এমআইকে/এমই/আইএইচ