images

রাজনীতি

সাক্কুকে নিয়ে মান ভাঙেনি বিএনপির, জায়গা হলো না মঞ্চে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৭:১৯ পিএম

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কার হতে হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কুকে। দল বহিষ্কার করলেও নেপথ্যে থেকে দলের জন্য কাজ করার ঘোষণা বরাবরই দিয়ে আসছেন তিনি। যার প্রমাণ রেখেছেন সদ্যসমাপ্ত বিএনপির কুমিল্লার বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে। দল যেন অতীত ভুলে ফিরিয়ে নেয় সেই আকাঙক্ষার কথাও বলেছিলেন। তার এমন কাজে মান ভাঙেনি বিএনপির। সেজন্য হয়তো কুমিল্লার সমাবেশ মঞ্চে ওঠার সুযোগ মেলেনি বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতার।

বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লায় নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। খোদ বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, সমাবেশ সফল করতে পদধারী অনেকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম ও খরচ করেছেন মনিরুল হক সাক্কু। কিন্তু বহিষ্কারের অজুহাতে তাকে মঞ্চে জায়গা দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, গত সিটি নির্বাচনে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির ভোটেই তিনি জয়ের একদম কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। অনেক নেতাকে এভাবে বহিষ্কার করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সবাই আশা করছেন সাক্কুকেও দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

কুমিল্লার সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে নিজের বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীদের থাকা-খাওয়ার জন্য। পদধারী নেতাদের চেয়েও বেশি সক্রিয় ছিলেন সমাবেশকে কেন্দ্র করে। সমাবেশের দিন আজ প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে টাউন হল মাঠের পূর্বকোণে হাজির হয়েছিলেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি। তবে এত আয়োজন আর শোডাউনে মন গলেনি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের।

যদিও মঞ্চে জায়গা না পেলেও খুব একটা আফসোস নেই কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কুর। তিনি আশা করছেন দল তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিএনপিতে ফিরিয়ে নেবে। আর ফিরিয়ে না নিলেও আমৃত্যু দলের সঙ্গে থাকবেন।

গণমাধ্যমকে সাক্কু বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় দল আমাকে বহিষ্কার করেছে। আমি বিএনপিকে ছাড়িনি। মরার আগ পর্যন্ত বিএনপি করে যাব। আমি তারেক রহমানের কাছে আবেদন করেছি। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন। সমাবেশ সফল করতে আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমি যেহেতু বহিষ্কৃত তাই নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে অবস্থান করছি।’

মেয়র সাক্কুর ঘনিষ্ঠ কবির মজুমদার জানান, নেতা-কর্মীদের প্রায় ১৫ হাজার গেঞ্জি-টুপি দেওয়া হয়েছে। তার সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠের পূর্বপাশে অবস্থান নিয়েছেন। সেখান থেকে তাকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে।

শুধু সাক্কুই নয়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে নির্বাচন করা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সারও মঞ্চে ওঠার সুযোগ পায়নি।

এর আগে খুলনায় বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জুকেও খুলনা সমাবেশে উঠতে দেওয়া হয়নি। তবে তিনি ব্যাপক শোডাউন করেছিলেন সেই সমাবেশে।

কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা (কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা উত্তর ও মহানগর শাখা), চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পাঁচটি শাখা বিএনপির উদ্যোগে আজকের বিভাগীয় সমাবেশ হয়। এটি বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় গণসমাবেশ।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।

বিইউ/এমআর