জেলা প্রতিনিধি
০৬ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০০ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না। তাই আওয়ামী লীগকে হটানো ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। মেশিনে নয়, জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে এই সুযোগ সৃষ্টির করা। এটি কেবল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নয়, সমগ্র জনগণের সামনে আজ এটিই লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণের যে আন্দোলন চলছে সেই আন্দোলনে তরিকুল ইসলামের মতো নেতার বড় অভাব। আজকে দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তরিকুল ইসলামের অভাব। তাই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তরিকুল ইসলামের স্বপ্নকে বাস্তাবায়ন করতে হবে।’
রোববার (৬ নভেম্বর) যশোরে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বরেণ্য এই রাজনীতিকের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির আয়োজনে রোববার বিকেলে বিডি হল মিলানয়তনে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
তরিকুল ইসলামের অবদান তুলে ধরে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম নির্যাতিত, নিপীড়িত, সাহসী, দৃঢ় চিত্ত, আপসহীন, সংগ্রামী, মজলুম রাজনৈতকি নেতার একজন রোল মডেল। তিনি শুধু যশোরের উন্নয়নের রূপকার নন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাকশালের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে জনগণকে স্বনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের যে রূপরেখা তার সাথে তরিকুল ইসলাম জড়িত। তাই বাংলাদেশের উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রের উন্নয়নে যশোরের মতো অবদান রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে নির্যাতিত, মজলুম ও গঠনমূলক রাজনীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি। তিনি ছাত্রজীবন থেকে সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।’
মোশাররফ বলেন, ‘তিনি (তরিকুল) সরকারি এম এম কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে গিয়ে কারাবন্দি ছিলেন। যশোর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাকালীন ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তীকালে যশোর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান, পরবর্তী সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দলের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত ও মন্ত্রিত্ব লাভ করেন। তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তার দীর্ঘ রাজনীতিক জীবনে অনেক ত্যাগ, সংগ্রাম, আন্দোলন করে অগ্রসর হয়েছেন। সামরিক শাসক এরশাদ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাকে আটক করে সীমাহীন নির্যাতন চালিয়েছিল।’

‘সেই সামরিক শাসকের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে সে সময় অনেকে এরশাদের পক্ষ নিয়েছিলেন, আবার অনেকে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আর তরিকুল ইসলাম অসীম সাহসিকতা দৃঢ় চিত্তে সীমাহীন নির্যাতন সহ্য করে স্বৈরশাসকের শাসকের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। সেই তরিকুল ইসলাম এ দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন সার্বভৌম ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘গায়ের জোরে ভোট ডাকাতির সরকার বাংলাদেশকে আজ ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। তারা দেশকে বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তারা টিকে থাকার জন্য গণতন্ত্র হত্যা করেছে। সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, মুদ্রা পাচারের মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে এই সংকট থেকে দেশকে উত্তোরণের জন্য শুধু বিএনপি নয় সমগ্র জনগণ তরিকুল ইসলাম মতো নেতার অনেক অভাব বোধ করছে।’
স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী।
জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে ও সদস্য মুনির আহমেদ বাচ্চুর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বকুল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান কবির যশোর জেলা বিএনিপির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ প্রমুখ।
প্রতিনিধি/জেবি