জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০২ অক্টোবর ২০২২, ০১:০৭ পিএম
নিজের জমির দখল ঠেকাতে গিয়ে হামলায় রক্তাক্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষকলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. মাকসুদুল ইসলাম এবার নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। নিজের জমি দখল বুঝে পাওয়া ও পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তা চাইলেন প্রশাসনের কাছে। কৃষকলীগ নেতা যার বিরুদ্ধে হামলা ও জমিতে অবৈধভাবে ঘর তোলার অভিযোগ করলেন তিনি হলেন ঢাকা উত্তরের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান ওরফে কসাই খলিল।
রোববার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাবেক ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন কৃষকলীগ নেতা।
মাথায় ব্যান্ডেজ পরে সংবাদ সম্মেলনে আসা মাকসুদুল ইসলাম বলেন, আমার ওপর হামলার ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। একজনকে গ্রেফতার করা হলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মাকসুদুল ইসলাম কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পদেও আছেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজধানীর কালশী এলাকার বাউনিয়াতে আমার একটি প্লট আছে। বাউনিয়া মৌজায় খতিয়ান নং- ৩৪৪৬৩, দাগ নং- ৪৩৬০১। প্লটটির বৈধ কাগজপত্র, নামজারি, খাজনা খারিজ সবই আমার নামে। দীৰ্ঘদিন ধরে এটি ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক কেয়ারটেকারকে মারধর করে আমার জায়গায় অবৈধভাবে ঘর তৈরি শুরু করে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) কে ফোন করলেও তাদের না পেয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করি। পরে থানার এসআই জিতুর সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই।
যার নেতৃত্বে জমি দখলের অভিযোগ সেই খলিলুর রহমান মাদক বিক্রেতা, কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন বলেও অভিযোগ কৃষক লীগ নেতার।
মাকসুদুল বলেন, ‘ওইদিন রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে খলিল তার সঙ্গে থাকা লোকজনসহ আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। খলিলের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপ দিলে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে আমাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।
এই ঘটনায় মামলা করার কথা জানিয়ে মাকসুদুল বলেন, পল্লবী থানায় ১৮ জনকে নাম উল্লেখ্য করে এবং ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৮২-২৮/০৯/২০২২। কিন্তু এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হামলার ঘটনার পরদিন থেকে মোবাইলে বিদেশে থাকা তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের নামে ফোন করে হুমকি দেয়া হচ্ছে। খলিল ও তার সহযোগী তারেকের নামে কোন মামলা না করতে বলা হয়। তাদের কথা অমান্য করলে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয়। পরিচয় জানতে চাইলে জিসান বলে পরিচয় দেয়।
পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে কৃষকলীগের এই নেতা বলেন, আমার স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ জানমাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছি। যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হতে পারে। জীবননাশেরও সম্ভাবনা হয়েছে। ইতিমধ্যে হুমকি পেয়ে পল্লবী থানায় তিনটি জিডিও করেছি। তাই প্রশাসনের কাছে আমি নিরাপত্তা চাই। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার চাই।
ঘটনার মূল অভিযুক্ত খলিলের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা হয়েছে বলে জানান এই কৃষক লীগ নেতা। সংবাদ সম্মেলন শেষে তার কর্মী সমর্থকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে।
বিইউ/এমআর