নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫৩ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) ছাত্রলীগের ‘অস্ত্র প্রশিক্ষণের জোন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ভিসি, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণাকালে এ কথা বলেন তিনি।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, প্রক্টর স্যার আমাদের জানিয়েছিলেন- যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত কমিটি দেখা করতে আসে, আমি আশ্বাস দিচ্ছি ছাত্রলীগ ছাত্রদলকে কিছুই করবে না। পরে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি আসবে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে। তবে আমরা দুপুর থেকে খবর পাচ্ছিলাম ভিসির ইন্ধনে হামলা হতে পারে। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কেও জানিয়েছি- দুপুর থেকে ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে।
কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, এর মধ্যেই ভিসি স্যার আমাদের অনুমতি দিলে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করি। পরে পূর্ব নির্ধারিত সময়েই সাক্ষাৎ করতে যাই। কিন্তু মিডিয়ার সামনেই ছাত্রলীগ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর রড, দা, চাপাতি দিয়ে প্রকাশ্যে নির্যাতন চালায়। আমরা ১৫ জনের তালিকা পেয়েছি, তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের অস্ত্র প্রশিক্ষণের জোন হয়ে গেছে দাবি করে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দলবাজ প্রশাসন তাদের সক্রিয় সহযোগিতা করছে। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা, সেই হামলার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হুমকি থাকা সত্ত্বেও তারা আজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি।
ছাত্রদলের সভাপতি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা স্পষ্টভাবেই বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এখানে নির্বিঘ্নে, নিরাপদভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা আমাদের অধিকার। এই অধিকার আমরা কারও কাছে সমর্পণ করিনি, করব না। অচিরেই ছাত্রদল আবারও ক্যাম্পাসে যাবে, ইনশাআল্লাহ। আমাদের ক্যাম্পাস, আমরাই থাকব। একই সঙ্গে এটাও বলে রাখতে চাই, আমাদের সহযোদ্ধাদের প্রতি ফোঁটা রক্তবিন্দুর জবাব অবশ্যই দিতে হবে। প্রতিজন সন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে আইনের আওতায় আনা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আগামীকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবারও (২৯ সেপ্টেম্বর) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ‘প্রতিবাদী ছাত্র সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া হামলায় জড়িতদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হলে অবিলম্বে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ।
এমই/আইএইচ