মো. ইলিয়াস
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:১৭ এএম
জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, তখন ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরির জন্য এর একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ‘উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা’স্লোগানকে সামনে রেখে পাঁচটি ছাত্রসংগঠন সম্মিলিতভাবে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আশির দশকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র সংসদে উল্লেখযোগ্য অবস্থান ছিল এই ছাত্র সংগঠনটির। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন কিংবা এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামেও সামনের সারিতে দেখা গেছে ছাত্রদলকে। যদিও বর্তমান সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সংগঠনটির অতীত ভূমিকা দৃশ্যমান নয়।
নানা প্রেক্ষাপটে ছাত্রদলের সভাপতি ও আহ্বায়কের পদে এসেছেন ২৪ জন। সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম আহ্বায়কের পদে আসীন হয়েছেন ২২ জন। ৫০২ সদস্য বিশিষ্ট বিএনপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদ পেয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা। এছাড়া কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা বিএনপির অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যেমন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল, কৃষক দলের নেতৃত্বে রয়েছেন।
বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় যারা
১৯৮৫-৮৬ সালের কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন শামসুজ্জামান দুদু। ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী, সাবেক এমপি, কৃষক দলের সভাপতি, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানের মতো বিভিন্ন পদ অলঙ্কৃত করেছেন তিনি।
১৯৮৭-৯০ মেয়াদে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি একজন ভালো বক্তা, তার লিখনিও রয়েছে। সচিত্র দেশকাল, প্রেসক্রিপশন, ইংরেজি পত্রিকা ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট অ্যান্ড গ্লোবাল-এর সম্পাদক। বেশ কিছুদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। বর্তমানে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ সম্পাদক এবং বিএনপি ডিপ্লোম্যাট কোরের অন্যতম সদস্য।
১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ছিলেন আমান উল্লাহ আমান। ৮৭-৯০ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক। ৯০ সালে ডাকসুর ভিপি, পঞ্চম থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদের সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্য ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর পর বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। রয়েছেন ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়কের পদেও।
১৯৯২ সালের ১৬ মে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি পদে জয়ী হন রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। কিন্তু আন্তঃকোন্দলের ফলে মাত্র চার মাস টিকেছিল রিজভীর কমিটি। চার মাস পরেই তিনি কেন্দ্রীয় সভাপতির পদ থেকে চলে যান। মাঠকাঁপানো এই ছাত্রনেতা ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ-রাকসুর ভিপি। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি সরকারের সময়ে তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও দফতরের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত।
১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতির পদে ছিলেন ফজলুল হক মিলন। সাবেক এমপি এবং বর্তমানে বিএনপির গাজীপুর জেলার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ১৯৯৬-এর শেষের দিকে ছাত্রদলের সভাপতির পদে আসেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সভাপতির পদে ছিলেন তিনি। তিনবারের সাবেক এমপি, বর্তমানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। এ্যানীর কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হাবীব-উন-নবী খান সোহেল। তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। এছাড়া ২০০২ সালের শেষের দিকে মাত্র চার মাসের জন্য ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন এবিএম মোশারফ হোসেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক।
২০০৩-২০০৪ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তী সময়ে সভাপতি ছিলেন আজিজুল বারী হেলাল। বর্তমানে তিনি বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক।
২০০৯ থেকে ২০১২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতির পদ ছিলেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বর্তমানে তিনি যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি। তার পৈতৃক নিবাস টাঙ্গাইল থেকে নির্বাচন করতে চান। টুকুর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আমিরুল ইসলাম খান আলীম। বর্তমানে তিনি বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক।
২০১২ থেকে ২০১৫ এর শুরু পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রাজীব আহসান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন আকরামুল হাসান। তারা এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন ফজলুর রহমান খোকন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। তারাও এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে বর্তমান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। আর সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন সাইফ মাহমুদ জুয়েল। দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
রাজনীতির বাইরে যারা
১৯৮৩ থেকে ৮৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন আবুল কাশেম চৌধুরীর। এরশাদ সরকারের সময় বিএনপি ছেড়ে চলে যান জাতীয় পার্টিতে। এর কিছুদিন পরেই রাজনীতি থেকে সরে যান তিনি। ১/১১-এর সময় তিনি পিডিপিতে যোগ দিলেও বর্তমানে কোনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার।
১৯৮১ সালে আহ্বায়কের পদে আসেন গোলাম সারোয়ার মিলন। পরবর্তীতে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিএনপি রাজনীতি ছেড়ে এরশাদ সরকারের সময় জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। সেখানে মানিকগঞ্জের একটি আসন থেকে এমপি এবং শিক্ষা উপ-মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতি থেকে সরে যান তিনি। ১/১১ এর সময় আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হন ফেরদৌস কোরেশীর দল পিডিপিতে। পরবর্তী সময়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারায় যোগ দেন। গত সংসদ নির্বাচনে বিকল্প ধারার কুলা প্রতীক নিয়ে মানিকগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
১৯৮৬ ও ৮৭ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন জালাল আহমেদ। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে পরবর্তীতে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। পরে রাজনীতি ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমান উল্লাহ আমানের আহ্বায়ক পদে থাকাকালীন যুগ্ম-আহ্বায়কের পদে ছিলেন সানাউল হক নীরু। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে একাধিকবার দুর্ব্যবহার করে বর্তমানে দলচ্যুত। ২০০৩ ও ০৪ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলে সাহাবুদ্দিন লাল্টু। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে অভিমানে দল ছেড়েছেন তিনি। বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন লাল্টু।
মারা গেছেন যারা
১৯৭৯ সালে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ছিলেন কাজী আসাদুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রনেতা সর্বশেষ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৭৯ সালে ছাত্রদলের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন আকম গোলাম হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নেতা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন দীর্ঘদিন। বিএনপির একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে তার ছিল খ্যাতি। বেশ কয়েক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। ছাত্রদলের শ্রেষ্ঠ সংগঠক বলে পরিচিত মাহবুবুল হক বাবলু।
ছাত্রদলের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি এনামুল করিম শহিদ। ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে পদ পান তিনি। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। সেখানে কোনো পদ-পদবী মেলেনি তার। পরবর্তীতে রাজনীতি ছেড়ে তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে সেখানেই অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর আগে তিনি অবসরে যান। ২০২১ সালের ৬ জুলাই তার মৃত্যু হয়।
১৯৮৬ সালের শেষের দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হয়ে ১৯৮৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন। এরশাদ সরকারের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলে বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু। এরপর ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি। অষ্টম জাতীয় সংসদে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীচর আসনে সংসদ সদস্যও ছিলেন। ২০০৯ সালে সংঘটিত পিলখানায় বিডিআর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৫ সালের ৩ মে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যান। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন তিনি।
২০০৫-২০০৯ পর্যন্ত শফিউল বারী বাবু ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ তিরি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই মারা যান তিনি। ১৯৯২ সালের শেষের দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম ইলিয়াস আলী। সাবেক এই সংসদ সদস্য ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে নিজ বাসায় ফেরার পথে রাজধানী ঢাকার মহাখালী থেকে নিখোঁজ হন। তখন থেকেই কোনো হদিস মেলেনি তার।
ইলিয়াস আলী ছিলেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালেই গুম হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী জাতীয় সম্মেলনে ইলিয়াস আলীর নাম আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়নি। এ নিয়ে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তবে তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনাসহ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা।
ছাত্রদলের ভূমিকা নিয়ে যা বলছেন সাবেক দুই সভাপতি
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ছাত্রদলের ভূমিকা কী জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, বিএনপির সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক ছাত্রদল কাজ করে আসছে। ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কাজ করতে গেলে অনেক বাধা-বিপত্তি আসে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ছাত্রদল তাদের ঐতিহ্যকে লালন করে আসছে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রদল ভূমিকা পালন করে আসছে।’
এ্যানী বলেন, ‘এখন একটা ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে তাদের শাসনকার্য চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে ছাত্ররা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম, সাংগঠনিক কার্যক্রম, শেখানে তারা বসতে পারে না। সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়েই এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করছে। এরপরও চড়াই উৎরাই বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এদেশের ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব ছাত্রদল দিচ্ছে। আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস ছাত্রদলের যে ঐতিহ্য লড়াই সংগ্রামের তারই ধারাবাহিকতায় এবারও জয়ী হবে ইনশাল্লাহ।’
জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যে বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ করতে চেয়েছিল এদেশের ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, কৃষকসহ মেহনতি মানুষ। স্বাধীনতার পর তার উল্টোটা হয়েছে। এ সময় ছাত্ররা ভালো একটা কিছু প্রত্যাশা করেছিল। জিয়াউর রহমানের সময় তিনটি ছাত্র সংগঠন মিলে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেছিল। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মূল স্লোগান হচ্ছে গঠনমূলক শিক্ষাব্যবস্থা। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলই এরশাদের স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের প্রথম নেতৃত্ব দেয়। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শুধু এরশাদের বিরুদ্ধে নয়, সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা ভূমিকা পালন করে।’
দুদু বলেন, ‘বর্তমানে সামরিক ফ্যাসিবাদী তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে এরা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন করে তোলার চেষ্টা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। প্রতিষ্ঠাকালীন যে অঙ্গীকার ছাত্রদের সপক্ষে স্বাধীনতার সপক্ষে যে ভূমিকা সেটি হচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। অর্থাৎ দোষ ত্রুটির ঊর্ধ্বে মানুষের সপক্ষে কাজ করা। ছাত্রদের পক্ষে, শিক্ষার পক্ষে কাজ করা।’
এমই/জেবি