কাজী রফিক
২২ জুলাই ২০২২, ০১:৫৬ পিএম
আগামী ডিসেম্বরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির চারটি সদস্য পদ এখনও শূন্য রয়েছে৷ সম্মেলনের আগে সেই পদগুলো পূরণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে কেউই কিছু জানাতে পারছেন না। দলের নেতারা বলছেন, পদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চাইলে যেকোনো সময় শূন্য পদে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন।
২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ তিন বছর। দলটির গত ২০ ও ২১তম সম্মেলন সময়মতোই হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ২২তম সম্মেলন করতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
গঠনতন্ত্রের ২৪(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় কমিটি, কার্যনির্বাহী সংসদ বা অন্য কোনো কমিটি বা সংসদীয় বোর্ডের সদস্যপদ বা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকর্তার পদ শূন্য হইলে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ উক্ত পদ শূন্য হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে কো-অপশন বা মনোনয়ন দ্বারা উক্ত শূন্যপদ অবশ্যই পূরণ করিবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মোট পদ সংখ্যা ৮১টি। এর মধ্যে চারটি সদস্য পদ বাদে বর্তমানে সব পদই পূরণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন ও বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা গেছেন। এর মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দুটি সদস্য পদ শূন্য হয়।
আবার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলটির সভাপতিমণ্ডলীর মোট পদ ১৭টি। এর বাইরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে এই পর্ষদের সদস্য।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন ও আবদুল মতিন খসরু। তারা তিনজন মারা গেলে খায়রুজ্জামান লিটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়।
এরমধ্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদে ছিলেন। ফলে পদ দুটি শূন্য হয়। এভাবে চারটি পদ শূন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান ঢাকা মেইলকে জানান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য পদের চারটি পদ এই মুহূর্তে শূন্য রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ঢাকা মেইলকে বলেন, 'এ বিষয়ে এখনও দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। ফলে এ বিষয়ে এখনও কিছু বলতে পারছি না।'
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, দলের শূন্য পদ পূরণের সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি তিনি।
এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের ২১তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নবমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন ওবায়দুল কাদের।
আগামী ডিসেম্বরে ২২তম সম্মেলনেও দলীয় সভাপতি থাকতে পারেন সরকারপ্রধান। পরিবর্তনের আভাস রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে।
সর্বশেষ সম্মেলনে আগের কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সব সদস্যকে বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও শাজাহান খানকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়।
৮১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করলেও ধর্ম এবং শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকসহ চারটি পদ ফাঁকা রাখা হয়েছিল। পরে সেই ফাঁকা পদে সিরাজুল মোস্তফাকে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে দলের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক করা হয়।
কারই/জেবি