আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
জামায়াতে ইসলামী আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শক্তিশালী জয়লাভ এবং জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা সেই বিষয়েও কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন জামায়াত আমির।
বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান।
রয়টার্স বলছে, নির্বাচনের আগে সাম্প্রতি বিভিন্ন জনমত জরিপ অনুযায়ী- প্রায় ১৭ বছরের মধ্যে অনুষ্ঠেয় প্রথম নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কাছাকাছি দ্বিতীয় স্থানে থাকবে জামায়াতে ইসলামী। এতে ১৭ কোটি ৫০ লাখ মুসলিম জনসংখ্যার এই দেশে দলটির মূলধারার রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। সর্বশেষ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জোট অংশীদার হিসেবে সরকারে ছিল জামায়াত।
ঢাকায় নিজের অফিসে বসে দেওয়া সাক্ষাতকারে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র দেখতে চাই। যদি সব দল এগিয়ে আসে, আমরা একসঙ্গে সরকার পরিচালনা করব।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘যেকোনও ঐক্যের সরকারের জন্য দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি অবশ্যই একটি অভিন্ন লক্ষ্য হতে হবে।’
নির্বাচনে জোট জিতলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না জানতে চাইলে জামায়াত আমির বলেন, ‘যে দল নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন জয় করবে সেই দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে। যদি জামাত সর্বোচ্চ আসনে জয় পায়, তাহলে দলই সিদ্ধান্ত নেবে আমি প্রধানমন্ত্রী হবো কি না।’
ভারতের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ঢাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তার পতনের পর দুই দেশের সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ভারত শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কর্মসম্পর্ক গড়ে তুলেছিল; যার ফলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ব্যবসা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারনে সহায়তা করেছিল।
সাক্ষাৎকারে চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতীয় একজন কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে নিশ্চিত করেছেন জামাত আমির। অন্যান্য দেশের কূটনীতিকরা যেখানে প্রকাশ্যেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, তবে ওই ভারতীয় কর্মকর্তা বৈঠকটি গোপন রাখার অনুরোধ করছিলেন বলে জানান শফিকুর রহমান।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের সবার সঙ্গে এবং নিজেদের মধ্যেও উন্মুক্ত সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।’
ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। তবে ভারত সরকারের একটি সূত্র বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে জামায়াতের ঐতিহাসিক ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখি। আমরা কখনোই কোনও একটি দেশের দিকে ঝুঁকতে আগ্রহী নই। বরং আমরা সবাইকে সম্মান করি এবং দেশগুলোর মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই।’
এমএইচআর/ক.ম