জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সাভার থেকে এসেছিলেন সুজন আহমেদ। পেশায় তিনি একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। বুধবার সকালে সাভার থেকে রওনা হয়ে দুপুর ১২টার দিকে পৌঁছান মানিক মিয়া এভিনিউয়ে।
জানাজা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। জানাজা শুরুর অনেক আগেই রাস্তাঘাট, পার্ক ও ফুটপাত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। তিনিও জানাজার নামাজ পড়তে কাতারবন্দি হন।
জানাজা শেষে তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী মারা গেছেন। দেশবাসী একটি বড় অভিভাবক হারালো। বিএনপি হারালো তাদের মাথা। গণতন্ত্রের আপসহীন এই নেত্রীর জানাজায় অংশ নিতে পেরে আমি গর্বিত।
তিনি আরও বলেন, আগামী প্রজন্মকে বলতে পারব, একজন নেত্রীর সর্ববৃহৎ জনসমাগমের জানাজায় অংশ নিয়েছিলাম।
তার মতে, খালেদা জিয়া মারা গেলেও আজীবন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে অম্লান হয়ে থাকবেন। খালেদা জিয়ার কাজ, কর্ম ও মতাদর্শ আগামীর তরুণদের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করবে, দেশপ্রেম জাগাবে এবং ভারতবিরোধী চেতনাও নতুন প্রজন্মকে প্রভাবিত করবে।
বুধবার লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায়। আশপাশের এলাকাগুলো লোকজনে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। যদিও দুপুর ২টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছিল, তার চার ঘণ্টা আগেই মানিক মিয়া এভিনিউ ভরে যায় মানুষের ভিড়ে। পরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অনেকে ফার্মগেট, শ্যামলী, আসাদগেট ও চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের আশপাশের সড়কেও দাঁড়িয়ে থাকেন। দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকলেও মানুষের মাঝে কোনো ক্লান্তি বা বিরক্তি ছিল না।
মানুষ একসঙ্গে জানাজায় অংশ নিতে পেরে অনেকে খুশি প্রকাশ করেন। টাঙ্গাইল থেকে এসেছিলেন দীপু আহমেদ। তিনি স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
দীপু আহমেদ জানান, শুধু তিনি নন, তার মতো আরও কয়েক শ নেতা টাঙ্গাইল থেকে এসেছেন। কর্মীদের আনতে পারেননি, শুধু নেতারাই এসেছেন। খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে পেরে তার ভালো লাগছে। যদিও কবরস্থ করার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন না, তবু জানাজায় অংশ নিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন।
গণভবনের সামনে কথা হয় সাভার থেকে আসা যুবক রায়হানের সঙ্গে। জানাজা শেষে জনস্রোতের সঙ্গে হাঁটছিলেন তিনি।
রায়হান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এমন জানাজা আগে খুব কমই দেখেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদীর জানাজায় বড় সমাগম হয়েছিল, তবে আমার মনে হয়েছে তাদের জানাজার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার জানাজায়। এত বড় জানাজা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ। খালেদা জিয়াকে আল্লাহ যে সম্মান দিলেন, তা হয়তো পূর্বনির্ধারিত ছিল। অন্যদিকে হাসিনা এখন জনবিচ্ছিন্ন। তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সবকিছুই সৃষ্টিকর্তারই ইচ্ছা।
এমআইকে/এআর