images

রাজনীতি

‌‘একে একে সব প্রিয় মানুষগুলো চলে যাচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৭ এএম

ভোরের আলো ঠিকমতো ফুটে ওঠার আগেই খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। খবর শোনামাত্রই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে জড়ো হতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা। কারও হাতে পতাকা, কারও চোখে জল—কেউ কথা বলছেন, কেউ বোবা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে এক নারী কর্মী কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁপা কণ্ঠে বলেন, ‘সাত তারিখে আমার হাজবেন্ড মারা গেছে। আর আজকে আমার মা মারা গেল। আমি কিভাবে সহ্য করবো? একে একে আমার সব প্রিয় মানুষগুলো চলে যাচ্ছে।’ তার কথা শেষ হওয়ার আগেই আশপাশের অনেকেই চোখ মুছতে থাকেন।

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপস্থিত নেতাকর্মীদের অনেকেই বলছিলেন, খালেদা জিয়া ছিলেন তাদের শেষ ভরসা। কেউ বললেন, রাজনীতির মাঠে তিনি ছিলেন দৃঢ়, আবার বিপদের দিনে ছিলেন আশ্রয়। তাই তার মৃত্যুতে নিজেদের অভিভাবকহীন মনে হচ্ছে।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন। তারা জানান, মৃত্যুসংবাদ শুনেই আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি।

দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ একাধিক জটিলতা নিয়ে তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন তার পাশে। পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডন থেকে এসে চিকিৎসার দেখভাল করেন। বিদেশে অবস্থান করলেও ছেলে তারেক রহমান নিয়মিত মায়ের খোঁজখবর রাখতেন।

হাসপাতাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়। যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি না ঘটে, সেজন্য বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। তবে পুরো পরিবেশজুড়েই ছিল নীরব শোক। স্লোগানের চেয়ে বেশি ছিল কান্না, কথার চেয়ে বেশি ছিল দীর্ঘশ্বাস।


এএইচ/এফএ