images

রাজনীতি / সারাদেশ

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন নিয়ে আলোচনা হতে পারে: জিএম কাদের

জেলা প্রতিনিধি

২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪ পিএম

আলোচনা সাপেক্ষে জাতীয় পার্টির দুর্বল আসনে বিএনপির সাপোর্ট এবং বিএনপির দুর্বল আসনে জাতীয় পার্টি সাপোর্ট দেবে— এমন আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক জায়গায় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছি। বিএনপিও জমা দিয়েছে। একবার মনোনয়ন জমা দিলে ওইভাবে সরাসরি জোট করার আর সুযোগ থাকে না। তবে আলোচনা সাপেক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব।’

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটায় রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাইভিউ বাসভবনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে  বৈষম্য করা হচ্ছে। অথচ এই জাতীয় পার্টি একমাত্র দল জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের পক্ষে রাজপথে ছিল। তারপরও জাতীয় পার্টির অনেকের নামে জুলাই আন্দোলনে হামলার মামলার দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় পার্টির তিনজন সংসদ সদস্য প্রার্থী জেলে আছেন। তাদের জামিন হলেও পুনরায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাওয়া যাচ্ছে না। একাধিকবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাক্ষাতের সময় পাচ্ছি না। অনেক দলকে বারবার সময় দিলেও আমাদের সময় দেওয়া হচ্ছে না।

thumbnail_gm_kader_photo

তিনি আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম অত্যন্ত জটিল করা হয়েছে। নতুন নতুন প্রার্থীরা এই ফরম পূরণে ভুল করবে। নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টিসহ অনেককে বিরত রাখতে পরিকল্পনা করে এই জটিল ফরম করা হয়েছে। বেআইনিভাবে আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে আইনিভাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছি।

জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনে সঠিক লেভেল প্লেয়িং নেই। আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। আমাদের হ্যারেজ করা হচ্ছে। সমাধান পেতে আমরা কার কাছে যাব এমন কাউকে পাচ্ছি না। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ঠিক থাকলে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে জয়ের ব্যাপারে।

আরও পড়ুন

আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রার্থিতা বাতিল ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

বিএনপির জোটে যাওয়া প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, আমরা অনেক জায়গায় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছি। বিএনপিও জমা দিয়েছে। একবার মনোনয়ন জমা দিলে ওইভাবে সরাসরি জোট করার আর সুযোগ থাকে না। তবে আলোচনা সাপেক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব। যদিও এমন কোনো আলোচনা বিএনপির সঙ্গে হয়নি। তবে আলোচনা সাপেক্ষে আমাদের দুর্বল আসনে তাদের সাপোর্ট এবং তাদের দুর্বল আসনে আমাদের সাপোর্ট দেবে এমন আলোচনা আমরা সুবিধামতে করতে পারি।

আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যেখানে সেখানে মামলা অভিযোগ ছাড়াই গ্রেফতার করা হচ্ছে। যা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। আমরা যেহেতু সবসময় নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলি সেহেতু আওয়ামী লীগ আমাদের সমর্থন দিতে পারে। এটাকে পুনর্বাসন বলে না। তাছাড়া পুনর্বাসন তারা কেন হবে। তারা কি এদেশের মানুষ না। আওয়ামী লীগের কর্মীরাও মানুষ। তারা কিন্ত মানুষ হিসেবে দেশের নাগরিক। তারা কোথাও না কোথাও ভোট দিতে যাবে। জামায়াত প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের ভোট চাচ্ছে, বিএনপিও চাচ্ছে। বিএনপিও আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের দোষ হচ্ছে না। শুধু আমাদের দোষ দেওয়া হচ্ছে।

thumbnail_japa_photo

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব। নির্বাচন কমিশন একতরফা, একপেশে যা নাটক করছে, আরও কি কি করে তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই। নির্বাচন নিয়ে তাদের বাহবা ও নাটক আমরা দেখতে চাই এবং বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসীর, আজমল হোসেন লেবু, জেলা সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, নাজিম উদ্দিন ও লোকমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

এর আগে জিএম কাদের বাবা-মা ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন।

প্রতিনিধি/এসএস