images

রাজনীতি

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, দুপুরেও ফাঁকা নিউমার্কেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম

সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও রাজধানীর নিউমার্কেটে দেখা যায়নি চেনা ভিড়, কেনাকাটায় ছিল স্থবিরতা। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটিতে প্রচুর বিক্রির আশা থাকলেও তেমন একটা বিক্রি নেই নিউ মার্কেটে। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা নিউমার্কেটে আজ সকাল পেরিয়ে দুপুর হলেও ছিল অস্বাভাবিক ফাঁকা পরিবেশ।

যে মার্কেট সাধারণত সকাল থেকেই ক্রেতার ভিড়ে মুখর থাকে, সেখানে আজ হাঁটাচলার জায়গা ছিল প্রশস্ত, দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিক্রেতাদের অপেক্ষাই যেন প্রধান চিত্র হয়ে উঠেছে।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকা ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এদিন দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বাসে করে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা হন তারেক রহমান। বাসের সামনে দাঁড়িয়ে হাত কেড়ে নেতাকর্মীদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন তিনি। কিছু সময়ের মধ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছাবেন তিনি।

এর আগে পৌনে ১২টার কিছু আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি।

বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে সম্প্রচার করা একটি লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের দরজা দিয়ে বেরিয়ে তিনি খোলা একটি অংশে দাঁড়ান। সেখানে ঝুঁকে মাটি ছুঁয়ে দেখেন তিনি। পরে জুতা খুলে কিছুক্ষণ খালি পায়ে দাঁড়ান সেখানে।

thumbnail_IMG_2671বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর তিনি একটি বাসে ওঠেন। ঢাকায় ৩০০ ফিট এলাকায় যেখানে তাকে দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হবে সেই মঞ্চের উদ্দেশে রওনা হয় বাসটি।

নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট ও আশপাশের ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল খুবই সীমিত। দুপুরের দিকে কিছু মানুষ এলেও তা স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। বিশেষ করে পোশাক, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানগুলোতে বিক্রি ছিল কম। অনেক দোকানদার অলস সময় কাটাতে একে অপরের সঙ্গে গল্প করতে বা মোবাইল ফোনে সময় পার করতে দেখা গেছে।

দোকানিরা বলছেন, ছুটির দিনে সাধারণত এই সময় নিউমার্কেটে প্রবেশ করাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। কিন্তু আজ সেই ভিড় নেই। বড় দিনের সরকারি ছুটি এবং রাজধানীর অন্য এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। অনেক ক্রেতাই নিরাপত্তা ও যাতায়াত পরিস্থিতির কথা ভেবে বাইরে বের হননি।

thumbnail_IMG_2674

নিউমার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানের বিক্রেতা মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘সকাল থেকে দোকান খুলে বসে আছি। দুপুর হয়ে গেল, হাতে গোনা কয়েকজন ক্রেতা এসেছে। অন্যদিন এই সময় দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। আজ পুরো মার্কেটই যেন ঘুমিয়ে আছে।’ তার ভাষায়, ছুটির দিনে এমন ফাঁকা নিউমার্কেট খুব কমই দেখা যায়।

একই সুর শোনা গেছে জুতার দোকানিদের কাছেও। আজিজ সুপার মার্কেটের এক দোকানি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বিক্রি বলতে গেলে নেই। অন্যান্য সময় বড় দিনে অনেক ভিড় থাকলেও এবার রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মানুষ আসছে না। দুপুরের পর একটু আশা ছিল, কিন্তু তেমন ক্রেতা আসেনি।’

তিনি আরও জানান, এমন দিনে দোকান চালু রাখা লোকসানের মতো হলেও কর্মচারীদের কথা ভেবে বন্ধও করা যাচ্ছে না।

ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে। সাধারণ দিনে নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাতজুড়ে যে কেনাবেচার ব্যস্ততা থাকে, আজ তা ছিল অনেকটাই অনুপস্থিত।

বিক্রেতারা জানান, আজকের আয় দিয়ে দৈনিক খরচ তোলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

ক্রেতাদের কেউ কেউ বলছেন, বাইরে বের না হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ আছে। কেউ ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বাসায় সময় কাটাচ্ছেন, কেউ আবার শহরের পরিস্থিতি দেখে বের হওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। ফলে নিউমার্কেটের মতো জনপ্রিয় কেনাকাটার কেন্দ্রও আজ ছিল নীরব।

এম/এমআই