নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৫ এএম
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে বহনকারী বিমানটি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বিএনপির এই নেতাকে সংবর্ধনা জানাতে রাজধানীর ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট) এলাকায় আয়োজন করা হয়েছে গণসংবর্ধনার। ইতোমধ্যে সংবর্ধনার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন তারেক রহমানের অপেক্ষায় আছেন নেতাকর্মীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশ নিতে কয়েক দিন ধরেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে লাখো মানুষ ঢাকায় আসছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফুট) নির্মিত সংবর্ধনাস্থলকে কেন্দ্র করে দেখা গেছে মানুষের ঢল। দলে দলে সমর্থকরা আসছেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। ফ্লাইওভার ও সড়কপথে জনস্রোত সভামঞ্চের দিকে যাচ্ছেন।
মূলত বুধবার থেকেই রাজধানীর কুড়িল-পূর্বাচল ৩০০ ফুট এলাকায় নির্মিত সংবর্ধনা মঞ্চের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। জাতীয় ও দলীয় পতাকা, স্লোগান ও প্ল্যাকার্ডে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ।
কুড়িল মোড় থেকে সংবর্ধনাস্থলে যাওয়ার পথে এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। কুড়িল মোড় থেকে কিছুটা দূরে সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ। গণসংবর্ধনার সময় মঞ্চে তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপির ২৫ জন জ্যেষ্ঠ নেতা উপস্থিত থাকবেন।
গণসংবর্ধনাস্থলে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। মঞ্চের দুই পাশে তাদের জন্য তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যরাও নিজেদের ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তার কাজে যুক্ত রয়েছেন।
মঞ্চের দুই পাশের সড়কের বাতির খুঁটিতে স্থাপন করা হয়েছে মাইক। পুরো অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের জন্য বসানো হয়েছে একাধিক ইলেকট্রনিক পর্দা (এলইডি স্ক্রিন)। জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসাসেবা দিতে ছয় শয্যার একটি অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। রাখা হয়েছে সুপেয় পানির ব্যবস্থাও।
সকাল দেখা যায়, খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সংবর্ধনাস্থলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে লাইভ করছেন। আবার কেউ দিচ্ছেন ‘মা-মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে এবার বাংলাদেশে’ এমন নানা স্লোগান।
মঞ্চের সামনে কথা হয় বরিশাল থেকে আসা রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে তারা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান। যেখানে থাকবে ন্যায়বিচার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের ভোটাধিকার ও জনগণের শাসন।
সারাদেশে থেকে আসছেন নেতাকর্মীরা
গণসংবর্ধনায় বিপুল উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি। আমাদের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা জানান, বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা ঢাকায় আসছেন।
বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনাস্থল
বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে (ঢাকা সময় রাত ১২টা ৩৬ মিনিট) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারেক রহমান। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি–২০২ ফ্লাইটে বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭–৯০০ উড়োজাহাজে করে দেশে ফিরছেন। উড়োজাহাজটি লন্ডন হিথ্রো–সিলেট–ঢাকা রুটে পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চপদস্থ যাত্রী থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় বিশেষ নিরাপত্তা ও সমন্বয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তারেক রহমানকে স্বাগত জানাবেন। এরপর তিনি সরাসরি পূর্বাচলের গণসংবর্ধনাস্থলে যাবেন।
বক্তব্য ও কর্মসূচি
বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গণসংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংবর্ধনাস্থলে তারেক রহমান উপস্থিত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া আর কেউ বক্তব্য দেবেন না।
জনদুর্ভোগ এড়াতে ছুটির দিনে তারেক রহমান দেশে ফিরছেন এবং গণসংবর্ধনার স্থান হিসেবে পূর্বাচলকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
এমআর