নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ এএম
তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাত পোহানোর আগেই ৩০০ ফিটে জড়ো হয়েছেন বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীরা। তবে দীর্ঘ এ রাত এখানেই অপেক্ষা করতে হবে তাদের, তাই গান-বাজনা ও স্লোগান দিয়ে নিজেদের চাঙ্গা রাখছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) পূর্বাচলের ৩০০ ফিটর সড়কে সরজমিনে দেখা যায়, ট্রাকের উপরে ঢোল, তবলা ও হারমনি নিয়ে গান-বাজনা মেতেছেন নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে এ রাস্তার শুরু থেকে মঞ্চ পর্যন্ত মিছিলে মিছিলে কিংবা জটলা বেঁধে স্লোগান দিয়ে নিজেদের উজ্জীবিত করে রাখছেন তারা। স্লোগান দিতে দিতে নেতাকর্মীরা যাচ্ছেন মূল মঞ্চের দিকে। হাতে জাতীয় পতাকা, দলের চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত পতাকা নিয়ে যাত্রা করেছেন তারা। ‘তারেক রহমান আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’...‘তারেক রহমানের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’... ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে, ফিরব বাংলাদেশে।’ এমন স্লোগানে মুখরিত তরুণ নেতাকর্মীরা।
কেরানীগঞ্জ থেকে আসা আদম আলী বলেন, আমাদের ঈদের চেয়েও বেশি খুশি লাগছে। গত ১৬/১৭ বছর আমরা কোথাও কথা বলতে পারিনি। হাট-বাজার, চায়ের দোকান কোথাও না। এখন আমাদের নেতা আসছে, আমাদের আর কেউ আটকে রাখতে পারবে না।
আরেক শাহজাহান মিয়া বলেন, আমরা ১৭টা বাসে করে কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। রাত ১২টার দিকে এসে পৌঁছেছি। নেতাকে একনজর দেখে, তবেই বাসায় যাবো।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকায় নেমে প্রথমে ৩০০ ফিটে নিজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তারেক রহমান। সেখানে একমাত্র বক্তা হিসেবে বক্তব্যও দেবেন। এরপর যাবেন এভারকেয়ার হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন মা খালেদা জিয়াকে দেখতে।
পরদিন শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাবা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতে যাবেন তারেক রহমান। সেখান থেকে যাবেন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে। একই দিন সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শরীফ ওসমান হাদির কবরও জিয়ারত করবেন তিনি।
এদিকে তারেক রহমানের সংবর্ধনাকে ঘিরে ৩০০ ফিটে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। এই অনুষ্ঠানে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর সমাগম হবে বলে আশা করছে দলটি। ইতোমধ্যে সংবর্ধনাস্থলে কয়েক লাখ নেতাকর্মী চলেও এসেছেন।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কারাগারে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয় তারেক রহমানের ওপর। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি সবগুলো মামলা থেকে জামিন পান। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। তৎকালীন সরকারের ষড়যন্ত্রে আর ফিরতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতন হলে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সব বাধা দূর হয়ে যায়। অবশেষে বিএনপির কোটি কোটি নেতাকর্মীর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কয়েক ঘণ্টা বাদেই ফিরছেন তিনি।
এমএইচএইচ/এজে