images

রাজনীতি

জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর না করায় ইউনূস সরকার আজ দিশেহারা: নাঈম আহমাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলে গঠিত ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর না করে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করায় বিচার, সংস্কার ও আসন্ন নির্বাচন আজ হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)-এর প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। ময়মনসিংহে শ্রমিক নেতা দিপু চন্দ্রকে পুড়িয়ে হত্যা এবং লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাঈম আহমাদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেতরে প্রয়োজনীয় শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে শেখ হাসিনা ও দিল্লির দোসরদের অপসারণ না করায় ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদী চক্র আজ দেশব্যাপী পরিকল্পিত স্যাবোটাজে লিপ্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে আপ বাংলাদেশ নেতা তাহমিদ হত্যা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী হত্যা, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ওপর হামলা, ময়মনসিংহে শ্রমিক নেতা দিপু চন্দ্রকে পুড়িয়ে হত্যা, লক্ষ্মীপুরে শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যা, চট্টগ্রামে শহীদ ইশমামের ভাই মুহিবকে হত্যাচেষ্টা এবং ঢাকার মিরপুরে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা—সবই একই ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত স্যাবোটাজের অংশ।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। নাঈম আহমাদ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কার্যত সক্রিয়ভাবে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, যার সুযোগ নিচ্ছে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি। আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে সরকার ও জনগণের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক পুনর্গঠন করা জরুরি।

একই সঙ্গে সংকটময় মুহূর্তে শুধুমাত্র তিনটি রাজনৈতিক দলকে ডেকে ফটোসেশন করার প্রবণতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল স্টেকহোল্ডার এবং সব রাজনৈতিক দলের মতামতকে গুরুত্ব দিলে সরকার আজ গণবিচ্ছিন্ন ও দিশেহারা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতো না।

এ সময় তিনি ইনকিলাব মঞ্চ ঘোষিত দুই দফা কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল যোদ্ধার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় প্রদত্ত ড. ইউনূসের বক্তব্যে খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

আপ বাংলাদেশের যুগ্ম প্রধান সংগঠক আবরার হামিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন— আপ বাংলাদেশের ঢাকা কলেজ শাখার সংগঠক সালমান শরীফ, শ্রমিক উইংয়ের সংগঠক রাফিম হাসনাত হিজবু, শ্রমিক উইংয়ের সমন্বয়কারী নাঈম হাসান, ঢাকা জেলা দক্ষিণের আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ সৌরভ, কেন্দ্রীয় সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, আসমাউল হুসনা, ফারহানা শারমিন শুচি, নোমান আব্দুল্লাহ, জাহিদুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জসীম উদ্দিন, যুগ্ম প্রধান সংগঠক ফায়াজ শাহেদ, সুলতান মারুফ তালহা এবং আহছান উল্লাহ প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং অব্যাহত হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও হামলা বন্ধে সরকারের জরুরি ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

এমআর/এএস