images

রাজনীতি

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫৩ এএম

অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য বিদায়ী তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘খুবই খুবই সংকটময় পরিস্থিতি সামনে, আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই। কারণ, অনেক হয়েছে, অনেক ধৈর্য হয়েছে।’ 

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে তিনি সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘আজকে বিচার চলমান আছে একদিকে, আরেক দিকে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে এই দেশ থেকে বেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নেবেন, ভারত থেকে আপনারা বাংলাদেশে সন্ত্রাস করার উসকানি দেবেন এবং সন্ত্রাস চালাবেন; আমার ভাইয়ের ওপর গুলি চালাবেন, আমরা এটা বরদাশত করব না। এখানে, বাংলাদেশে, ভারতের ও ভিনদেশিদের যারা স্বার্থ রক্ষা করবে, তাদের নিরাপদে থাকতে দেওয়া যাবে না। আমরা যদি নিরাপদে না থাকি, এই দেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদে থাকতে পারবে না— এটা হচ্ছে বেসিক কন্ডিশন।’

কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত বছর জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন মাহফুজ আলম। তাকে গণঅভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ আখ্যা দিয়েছেন ড. ইউনূস। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সম্প্রতি তিনি পদত্যাগ করেছেন।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী আমাদের যে লড়াই করার কথা ছিল, সেই লড়াইয়ে আমরা পরাস্ত হয়েছি। এ কারণেই আজকে আমাদের মধ্য থেকে একজন জুলাইয়ের বীর শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে ৫ আগস্টের পরে যখন এই মুজিববাদীদের, এই আওয়ামী লীগ, এই ১৪-দলীয় সন্ত্রাসীদের প্রতিটি বাড়ি চুরমার করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল, সেদিন আমরা নিজেদের সংবরণ করেছিলাম বলে আজকে তারা এ সাহস করতে পারছে। আমরা ক্ষমা করে যদি ভুল করে থাকি, তাহলে আমরা প্রতিজ্ঞা করব, আমরা আর ক্ষমা করব না।’

Mon
সংগৃহীত ছবি

মাহফুজ আরও বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকে বলেছিলাম যে, মুজিববাদের মূল উৎপাটন করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে মুজিববাদের শেকড় এমন গভীরে প্রোথিত যে, একে কালচারালি, ইন্টেলেকচুয়ালি, পলিটিক্যালি সকল অর্থেই মোকাবিলা করার যে শক্তি-সামর্থ্য, এই শক্তি-সামর্থ্য অর্জনের চেষ্টা অথবা লড়াইয়ের দিকে এগোনোর চেষ্টা আমরা খুব কমই দেখেছি। এই ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার একটা উদ্যোগ। এর বাইরে আমরা খুব কমই উদ্যোগ দেখেছি।’

সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘৭২-এর সংবিধানের ভিত্তিতে যেই মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, যে মুজিববাদের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মানুষের লাশ ফেলা হয়েছে এই স্বাধীন বাংলাদেশে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদকে বজায় রাখার জন্য এখানে কালচারাল অ্যাকটিভিস্টদের থেকে শুরু করে, এখানের বুদ্ধিজীবীদের থেকে শুরু করে, শিক্ষকদের থেকে শুরু করে, আইন অঙ্গনের লোকদের সবাইকে কবজা করে ফেলা হয়েছে।’

Monu
সংগৃহীত ছবি

‘ভিনদেশি অ্যাসেটরা হাদিকে মারার যুক্তি উৎপাদন’ করেছে দাবি করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘তাকে (হাদি) যখন মারা হয়েছে, তখন সবগুলো নীরব হয়ে বসে রয়েছে। কোনো কথা নেই, সবাই নাটক করতেছে আমাদের সঙ্গে।’

সাবেক এ তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, আমরা এই দেশের ভেতরের রাজনৈতিক লড়াইকে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে এই দেশের ভেতরে মোকাবিলা করব। আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই যে, যদি এই দেশের লড়াই দেশের বাইরে যায়, তাহলে এই দেশের মুক্তির লড়াইও এই দেশের বাইরে যাবে।’

এফএ